কারচুপির অভিযোগে পাবনা-৩ আসনে পুনরায় নির্বাচন দাবি

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  পাবনা প্রতিনিধি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে কারচুপি, জালভোটসহ নানা অভিযোগ এনে পাবনা-৩ আসনের ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার সব ভোট কেন্দ্র ও চাটমোহর উপজেলার ছয়টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার। জেলার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলা নিয়ে পাবনা-৩ আসন গঠিত। গতকাল দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে পুনর্নির্বাচন দাবি করেন তিনি। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের সহযোগিতায় এসব অনিয়ম করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হামিদ বলেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে পাবনা-৩ আসনে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার ভোটকেন্দ্র থেকে নৌকার প্রার্থী মকবুল হোসেনের ছেলে ও তাদের সমর্থকরা আমার এজেন্টদের জোর করে বের করে দিয়ে জালভোট দিয়েছে, অবাধে ভোট কেটে নিয়েছে। এর মধ্যে অনেক ভোটকেন্দ্রের আমার পোলিং এজেন্ট এসব অভিযোগের সত্যতা জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ব্যালট পেপার নিয়ে জোর করে সিল মেরেছে নৌকার লোকজন। অনেক কেন্দ্রের ভোটারদের তুলনায় ভোট বেশি কাটা হয়েছে। ফলাফল পর্যালোচনা করলে তার প্রমাণ মিলবে। এছাড়া ব্যালটের মুড়ি বই অংশ পরীক্ষা করলে দেখা গেছে সেখানে ভোটারদের কোনো নম্বর বা স্বাক্ষর নেই। আবার অনেক ভোট কেন্দ্রের বাইরে থেকে নৌকার সমর্থকরা আমার ট্রাক প্রতিকের সমর্থিত ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে। অনেককেই ভোট দিতে দেয়া হয়নি। আবার অনেক ভোট কেন্দ্রের ভোটার ও গ্রহণকৃত ভোটের সংখ্যা যাচাই বাছাই করলে অসামঞ্জস্য ধরা পড়বে। কারচুপি ও জালভেটে বিজয়ী হওয়ার পর আমার অনেক সমর্থককে মারধর করা হয়েছে। ৩০ জনের মতো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। অন্তত দেড় শতাধিক বাড়িতে ভাঙচুর করেছে নৌকার লোকজন।

আওয়ামী লীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার আরো বলেন, এবারের নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং উৎসবমুখর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তা প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে ভোটের ফলাফল নিয়ে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। পরাজয় নিশ্চিত জেনে ফলাফল নিজের পক্ষে নিতে নৌকার প্রার্থী ও তার ছেলে নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।

পুনর্নির্বাচনের দাবি করে তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে পাবনা-৩ আসনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। তিনি ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার সব ভোট কেন্দ্রের এবং চাটমোহর উপজেলার ছয়টি ভোট কেন্দ্রের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ওই সব কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানান। উল্লেখ্য, পাবনা-৩ আসনে বেসরকারি ফলাফলে নৌকার প্রার্থী মকবুল হোসেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার ট্রাক প্রতীকের পেয়েছেন ১ লাখ ১৫৯ ভোট।