ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে জবুথবু সারাদেশ

উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস দিনাজপুরে রেকর্ড করা হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে রয়েছে শীতের দাপট। পৌষের শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা সড়ক ও প্রকৃতি। বৃষ্টির মতো ঝড়ছে কুয়াশা। বইছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। সূর্যের দেখা সহজে মিলছে না। আবহাওয়া অফিস বলেছে, আকাশে মেঘ থাকায় এই পরিস্থিতি আরো কয়েক দিন বিরাজ করতে পারে। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

লালমনিরহাট : গত এক সপ্তাহে দেখা নেই সূর্যের। কনকনে ঠান্ডা, হিমেল বাতাস, ঘন কুয়াশায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে কনকনে শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জেলায় বসবাসরত মানুষ। বিশেষ করে খেটে খাওয়া, ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। যারা দিন এনে দিন খায় হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় তাদের অনেকেই কাজে বের হতে পারছে না, যারা কাজে নেমেছেন তাদের পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে।

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত শুরু হতেই অনুভূত হচ্ছে প্রচণ্ড শীত। উপজেলার তাপমাত্রার পারদ নিচেই নামছে। ক্রমশই বাড়ছে ঠান্ডার দাপট। অনেক জনপদ মুড়ে গেছে কুয়াশার চাদরে। ফলে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে কুয়াশার সাথে সাথে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা।

গরম কাপড়েও নিবারণ হচ্ছে না শীত। বিপাকে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। গতকাল শনিবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকছে। সকালে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করেছেন খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষরা।

দিনাজপুর : অব্যাহত মৃদু ও মাঝারি শৈত প্রবাহে জীবনযাত্রা দারুণভাবে ব্যাহত এবং খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। গতকাল শনিবার হিমালয়ের পাদদেশের উত্তরের জেলা দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ভোর ৬টায় তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও পরে তা কমে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। গত তিন দিন ধরে অব্যাহত মৃদু ও মাঝারি শৈতপ্রবাহে এখানকার জীবনযাত্রা দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না বিকাল পর্যন্ত থাকছে ঘন ও হালকা কুয়াশা।

জয়পুরহাট : উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাট। রাতে বৃষ্টির ফোঁটার মতো পড়ছে শিশির। তীব্র শীতেও কয়েক দিন ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গতকাল সকালে ১০টা ৪৫ মিনিটে জেলায় ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গত শুক্রবার রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সরেজমিন জেলার হাসপাতাল ও বিভিন্ন এলাকাঘুরে দেখা যায়, ঠান্ডায় হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের ভিড় বেড়েছে।

দিনের বেলায়ও যানবাহনকে লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। বেশিরভাগ শ্রমজীবী, নিম্ন আয়ের মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। জেলা আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার শহিদ হোসেন জানান, শীত জনিত নানা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশু ও বয়স্করা বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগী বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছেন। রোদ ছাড়া শিশুদের বাইরে বের না হওয়া এবং গরম খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

গাইবান্ধা : গত ছয় দিন সূর্যের দেখা না মেলায় ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে এই জেলায়। গতকাল সকাল ৯টায় জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ জেলায় এবার মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

২৪ ঘণ্টা আগেও জেলার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা। জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ক্লিনিকগুলোতে শীতজনিত রোগ নিয়ে শিশু ও বয়স্ক রোগীরা বেশি আসছে। এদের মধ্যে মধ্যে সর্দি, কাশি, জ্বর ও অ্যাজমায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।