ভালো ফলনের আশায় ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত কৃষক

১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আবাদ

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরে ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজে সহযোগিতা করছেন। ভালো ফলনের আশায় ইরি-বোরো আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কেশবপুর উপজেলায় ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোপুরি ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক। এবার উপজেলায় ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ করেছেন কৃষকরা। সরকারের দেওয়া বীজ ও সার কৃষি অফিস থেকে ৪ হাজার কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল।

গতকাল শনিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা খেতে গরুর বদলে মই টানছে। আবার কেউ কেউ ইরি বোরো রোপণ ও রোপণের জন্য জমিতে পরিচর্যার কাজ করছে। আধুনিক যুগে এসে যোগ হয়েছে ইঞ্জিনচালিত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর। কথা হয় উপজেলার বাগদহা গ্রামের কৃষক আবদুল জলিলের সাথে। তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় ইরি বোরো চাষ ছাড়া অন্য ফসল তেমন না হওয়ায় হালের গরু পালন করা হয় না। আগে আমারও হালের বলদ ছিল। সারা বছর গরু পালন করতে যে টাকা খরচ হয় তা দিয়ে আমাদের মতো কৃষকের গরু পোষা সম্ভব না। এখন বিচালীসহ গো খাদ্যের অনেক দাম। গরু দিয়েই খেতে মই দিতে হয়। বর্তমানে আমার হালের বলদ না থাকাই সকাল থেকে নিজেরাই খেতে মই টানছি। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে ইরি ধানের চারা রোপণ করা শুরু করেছি। কৃষক হাবিবুর রহমান হবি মোড়ল বলেন, বাগদহা বিলে ৬ বিঘা জমিতে ইরি বোরো ধান চাষ করব। তার মধ্যে ৩ বিঘা জমিতে চারা রোপণ করা হয়ে গেছে। সব জমিতেই গরুর বদলে নিজেদেরই মই টানতে হচ্ছে। ফতেপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুল্লাহ বলেন, সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চলতি বোরো মৌসুমে ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা ৭ বিঘা জমিতে ইরি ধান রোপণ করা শুরু করেছি। ভালো ফলনের আশাবাদী তিনি। ওই এলাকার আবুল হোসেন বলেন, তার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চারা রোপণের পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করে নেয়ার পর নিজেরাই মই টেনে জমি সমান করে চারা রোপণ করছেন। সুজাপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুজনসহ আরো অনেক কৃষক জানান, আধুনিক যন্ত্র দিয়ে দ্রুত জমি চাষ হওয়ায় এখন গরুর লাঙ্গল, মই হারিয়ে যাচ্ছে। গরুর বদলে বিকল্প হিসেবে মানুষই মই টেনে জমি সমান করে নিচ্ছে। এমন দৃশ্য উপজেলার প্রায় সব জায়গায়। তারা আরো বলেন, উপজেলাজুড়ে কৃষকরা ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমরা ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মামুদা আক্তার বলেন, এ বছর কেশবপুর উপজেলায় ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোদমে ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এবার এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদ করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।