ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টিতে লোকসানের আশঙ্কায় গদখালীর ফুলচাষিরা

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

চলমান শৈতপ্রবাহ, ঘনকুয়াশা ও বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীর ফুলচাষিরা। গদখালী, নাভারন ও পানিসারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় দুইশ’ বিঘা জমির গোলাপ পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে, আরও বেশকিছু জমি আক্রান্ত হয়েছে।

কয়েকদিনের কুয়াশায় অধিকাংশ গোলাপ ও গাঁদা ক্ষেতের ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া শীতে অসুবিধা না হলেও কয়েকদিনের ঘনকুয়াশায় গোলাপ ও গাঁদা গাছের ফুল এবং ডগা পচে যাচ্ছে, ঝরে যাচ্ছে পাতাও। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে পানিসারা ইউনিয়নের টাওরা গ্রামের ফুলচাষিরা। উপজেলার টাওরা গ্রামের ফুলচাষি মোহর বলেন, মাঝে যে বৃষ্টি হয়েছিল মূলত তারপর থেকেই গোলাপ গাছে রোগ দেখা দিয়েছে। শীতে ফুল চাষের তেমন ক্ষতি হয় না। কিন্তু কুয়াশার কারণে ফুল নষ্ট হচ্ছে। সোহাগ হোসেন নামে আরেক চাষি বলেন, আমার ১ বিঘা জমির গোলাপ নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো কীটনাশকে কাজ হচ্ছে না। মনে হচ্ছে ফুলেও করোনা ভাইরাস লেগেছে। তিনি আরও বলেন, চাষিদের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি ও ২১ ফেব্রুয়ারি ফুল বেচাকেনার প্রধান দুটি দিন। এ বছর মনে হয় না চাষিরা লাভবান হবে। কারণ কম-বেশি সবারই ফুলে পচন ধরেছে। ফুলচাষি কামারুল ইসলাম বলেন, গোলাপ ফুলই আমার একমাত্র আয়ের উৎস, আমাদের ফুল বেচাকেনার প্রধান উৎসব হচ্ছে ভালোবাসা দিবস। ফুল পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবার দাম বাড়তে পারে। পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, ফুলচাষে শীতের সময় সাধরণত তেমন কোনো সমস্যা দেখা যায় না। কয়েকদিনের ঘনকুয়াশায় অনেক চাষির গোলাপ গাছের পাতা ঝরে যাচ্ছে। কুয়াশার কারণে সব ধরনের ফুলখেতে ভাইরাস লেগেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ফুলের সংকট দেখা দিতে পারে। গদখালী ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, অতিরিক্ত শীত ও কুয়াশার কারণে সব ধরনের ফুল ফোটা কম দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ফুলে স্পট দেখা দিয়েছে। এভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলের উৎপাদন কম হবে। ফলে বাজারে প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা অনেক বেশি। দামও বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি। টাওরা, নীলকণ্ঠ নগর গ্রামের উপসহকারী কৃষি অফিসার অর্ধেন্দু পাড়ের কাছে সরেজমিন এসে ফুলের খেত দেখে পরামর্শ দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও তিনি আসেননি। চাষিদের অভিযোগ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সময়মতো কোনো পরামর্শ প্রদান করেন না। চাষিদের একটাই চাওয়া সরকারিভাবে ফুলচাষিদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো পর্যবেক্ষণ করা। চাষিরা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।