ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মাঘের শীতে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি

বিপর্যস্ত জনজীবন
মাঘের শীতে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি

হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা আরো বেশি অনুভূত হচ্ছে। এতে কৃষকসহ চরম বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররা। বৃষ্টির মধ্যে অন্তত ১০ জেলায় বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার মধ্যে মাঘের শীতে শৈত্যপ্রবাহ ও বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিতে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় মাঘের বৃষ্টিতে হাঁড় কাপানো শীত পড়ছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। জেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো গতকাল এক দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়। গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এর পর ভোরের দিকে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। সকাল ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির সঙ্গে হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতা বাড়িয়েছে। গতকাল সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার। চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, এখন থেকে আগামীদিনে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাবে।

যশোর : তীব্র শীতে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় যশোরে বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ। গতকাল ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। শীতের মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিতে ঠান্ডার তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিঘ্ন ঘটেছে কর্মজীবী মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে। যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানঘাঁটির আবহাওয়া দপ্তরের ওয়ারেন্ট অফিসার নাজমুল হাসান বলেন, গতকাল সকালে যশোরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে জনজীবনে অস্বস্তি আরো বেড়েছে। অটোরিকশা চালক মমিনুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ভোরে শীতের সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। তার সঙ্গে বাতাস তো আছে। বৃষ্টি ও শীতে কারণে ইজিবাইক চালাতে কষ্ট হচ্ছে। অন্য বছর বিভিন্ন সংগঠনের থেকে কম্বল পেলেও এ বছর কোনো কম্বল পাইনি। রিকশাচালক রহমান বলেন, এ শীতে হাত-পা সব কালা হয়ে যাচ্ছে। রিকশার হ্যান্ডেল ধরে রাখা যায় না। তবুও পেটে কি আর এসব মানে? বাড়ির লোকের কথা চিন্তা করলে শীত পলায় যায়। জেলা ত্রাণ ও পুর্বাবাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ রিজিবুল ইসলাম বলেন, জেলার অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য ৬১ হাজার কম্বল বরাদ্দ ছিল। তার মধ্যে ৫৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৭৫ হাজার কম্বলের চাহিদার কথা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

গোপালগঞ্জ : গত প্রায় ১ সপ্তাহ ধরে কনকনে শীতের পর গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গোপালগঞ্জে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রচণ্ড শীত আর বৃষ্টিতে ঘর থেকে বের হতে পারছে না মানুষ। বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরাও। রাস্তায় কমে গেছে জানবাহন চলাচল। গোপালগঞ্জ আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান বলেন, বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হতে পারে শুক্রবারও। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৭টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ১২ দশমিক ৭ হলেও শনিবার মেঘ কেটে যাওয়ার পর তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।

ভোলা : তীব্র শীতের মধ্যে ভোলায় শুরু হয়েছে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। একদিকে তীব্র শীত আরেকদিকে বৃষ্টি। এতে জনজীবন জবুথবু অবস্থায় পড়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত ঘর থেকে বের হচ্ছেন না মানুষ। কনকনে ঠান্ডায় সবচে বেশি বিপাকে পড়েছে দিনমজুর মানুষ। শ্রমজীবী মানুষ কনকনে ঠান্ডার মধ্যে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের তাপ নিচ্ছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে কনকনে বাতাসের সঙ্গে শুরু হয় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী আরও দু’তিন দিন জেলায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

ঝালকাঠি : তীব্র শীতের মধ্যে ঝালকাঠিতে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে।

এর ফলে বেড়ে গেছে শীতের তীব্রতা। আকাশ মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন হওয়ায় সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। ঝালকাঠিতে গত কয়েক দিন ধরেই তীব্র শীতে মানুষজন কাবু হয়ে পড়েছে। বেশি সমস্যায় শিশু ও বয়স্ক নাগরিকরা। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষেরা। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল খুব কম। অনেক জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে মানুষজনকে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত