ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শীতলপাটি বিক্রি করে চলে ৬০০ পরিবার

শীতলপাটি বিক্রি করে চলে ৬০০ পরিবার

ঝালকাঠির বহুকালের পুরোনো ঐতিহ্য শীতলপাটি। একটা সময় ছিল যখন গ্রামের বাড়িতে অতিথি এলে তাকে বসতে দেওয়া হতো শীতলপাটিতে। গৃহকর্তার বসার জন্যও ব্যবস্থা থাকত এ বিশেষ পাটিতে। বর্তমানে হিন্দুদের বিয়ের অন্যতম অনুষঙ্গ এই শীতলপাটি। দেশের যে কয়েকটি জেলায় শীতলপাটি তৈরি হয়, তার মধ্যে ঝালকাঠি জেলা অন্যতম। দেশ-বিদেশে ঝালকাঠির শীতলপাটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লার হাট, তিমিরকাঠি, কামদেবপুর সুবিধপুর প্রভৃতি জায়গায় শীতলপাটি তৈরি ও উপকরণ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে পাটিকররা। রাজাপুর উপজেলার ৬ নং মঠবাড়ি ইউনিয়ন হাইলাকাঠি, ২নং শুক্তাগড় ইউনিয়নের ডহরশংকর সাংগর ও জগন্নাথপুর গ্রামে শিশু, কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে ৭০-৮০ বছরের বৃদ্ধা পাটিকরদের নিপুণ কারুতে শীতলপাটি তৈরি করে ঝালকাঠি জেলায় প্রায় ৬০০ (ছয় শত) পরিবারের চলে সংসার। তবে ডিসি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে সরকারি তালিকাভুক্ত ৭৯টি পরিবারের নামের তালিকা তাদের কাছে রয়েছে। তবে পাটিকর সমিতির পরিচালক জানান, তাদের প্রতিবছর পাটিকরদের নিয়ে একটা আয়োজন থাকে সেখানে জেলার সব পাটিকরদের নিমন্ত্রণ করা হয় সেই সূত্রে জেলায় ৬০০টি পরিবার রয়েছে। জেলা পাটিকরদের দুটি সরকারি রেজিস্ট্রেশনভুক্ত সংগঠন রয়েছে একটি হলো রাজাপুর উপজেলায় আশার আলো শীতল পাটি উন্নয়ন প্রকল্প সমিতি। এটি ২০০৭ সালে সেনাবাহিনী তৈরি করে দেন পাটিকরদের জন্য। এরপর তারা ২০১২ সালে সরকারি রেজিস্ট্রেশন পান। অপরটি হলো নলছিটি উপজেলায় শীতল পাটি শিল্প যুব ফাউন্ডেশন। তারা ২০২২ সালে সরকারি রেজিস্ট্রেশন পান তবে ভবনের কাজ চলমান আছে এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। মঠবাড়ি ইউনিয়নের ছোট হাইলাকাঠি ও ডহরশংকর দুটিই শীতলপাটির গ্রাম। কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার সেই ধানসিঁড়ি নদী পাড়ি দিয়ে কিছু দূর গেলেই বিষখালী নদীর তীরে অবস্থিত এ গ্রামটি। শীতলপাটির জন্যই পুরো গ্রাম সুশীতল ছায়ায় আবৃত। চিরন্তন বাংলার প্রাকৃতিক রূপ এই হাইলাকাঠি গ্রামটি অসম্ভব সুন্দর। রাস্তার দু’পাশে রয়েছে পাইত্রার খেত। বাঙালি ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো শীতলপাটি। গরমে ঠান্ডা অনুভূতি পাওয়ার জন্য একসময় ঘরে ঘরে একপাশে লাল কাপড় লাগানো শীতলপাটির ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মতো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত