ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঘন কুয়াশায় ঝরে পড়ছে পান

লোকসানের মুখে ভাণ্ডারিয়ার সহস্রাধিক পানচাষি
ঘন কুয়াশায় ঝরে পড়ছে পান

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার সম্ভাবনাময়ী ফসল পান। এ এলাকার পান রসালো আর মিষ্টি- এ কারণে এ এলকার পানের চাহিদাও অনেক বেশি। ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের প্রভাব পড়েছে পান চাষে। ঘন কুয়াশায় পানপাতা হলুদ বর্ণ হয়ে পচন ধরে তা ঝরে পড়ছে। এছাড়া তীব্র শীতের কারণে এরই মধ্যে পান বরজে বিভিন্ন ছত্রাক জাতীয় রোগ দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন উপজেলার সহস্রাধিক পান চাষি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ২৪০ কেক্টর জমিতে সহস্রাধিক পানের বরজ রয়েছে এবং দুই হাজার চাষি পান চাষের সাথে যুক্ত। বারি-১ ও বারি-২ জাতের পান বরজে উৎপাদিত ভাণ্ডারিয়া উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করা হয়। এ উপজেলার মাটিও পান চাষের জন্য বেশ উপযোগী। পান চাষ লাভজনক হওয়ায় এ এলাকার মানুষ পান চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ভাণ্ডারিয়ায় দিন দিন পান চাষের আয়তনও বেড়ে চলছে। গত বছর ২০০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হলেও এ বছর বেড়ে তা ২৪০ হেক্টর হয়েছে। কিন্তু সেই পান চাষিরাই এখন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। পৌষ আর মাঘের তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় পান বরজকে ক্ষতির মুখে ফেলেছে। প্রতিটি বরজে লতার সাথে পানপাতা হলুদ বর্ণ হয়ে শুকিয়ে তা পচে মাটিতে ঝরে পড়ছে। বরজের ওপরে ঘন ছাউনি আর চারপাশে পলিথিন দিয়ে ঘিরে রেখেও পানপাতা রক্ষা করতে পারছেন না চাষিরা। পানপাতা ঝরে পড়ার কারণে বাজারে পানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন। সরেজমিন উপজেলার পৌর শহরের লক্ষিপুরা মহলা, কানুয়া ও নদমূলা শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বেশ কয়েকটি পানের বরজে ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় পানপাতা হলুদ বর্ণ হয়ে পচন ধরে তা ঝরে পড়েছে। একই চিত্র প্রায় প্রতিটি পানের বরজে। এতে পান চাষিদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগের দাবি, ঘন কুয়াশার ও তীব্র শীতের কারণে পানের বরজে এক প্রকার ছত্রাক রোগ দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছে পান চাষিরা। তারা ছত্রাকনাশক ওষুধ ব্যবহারের জন্য পান চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন। পরিমল হাওলাদার, মনোরজ্ঞন বিশ্বাস একাধিক পান চাষিরা জানান, সারা বছর জুড়ে পানের বরজের লাগানো লতায় পানপাতা ধরতে থাকে। অধিক লাভের আশায় শীতের দুই মাস আগে থেকে বরজ থেকে তারা পান তোলেন না। কিন্তু এ বছর তীব্র শীতের কারণে বরজে পানপাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। লাভ তো দূরের কথা চাষিরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। লক্ষিপুরা মহল্লার পান চাষি অমল রায় জানান, এ রোগের কারণে তার ৩০০ পানের বরজে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। লক্ষিপুরা মহল্লায় শতাধিক পান চাষি ছিল লোকসানের কারণে তিনি ছাড়া সবাই বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। পান ব্যবসায়ী মনিন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও তনয় সেন জানান, পানপাতা হলুদ বর্ণের হয়ে যাওয়ার কারণে পাইকাররা পান ক্রয় করতে চায় না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত