ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শৈত্যপ্রবাহে রসুন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

শৈত্যপ্রবাহে রসুন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

টানা শৈত্যপ্রবাহে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের সাদা সোনাখ্যাত রসুনগাছের পাতা সবুজ থেকে হলুদ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক-কৃষাণীরা। কীটনাশক ও স্প্রে দিয়েও হচ্ছে না এই অবস্থার পরিবর্তন। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, এটি আবহাওয়াজনিত বিষয় দুশ্চিন্তার কিছু নয়। তাই এই সময়ে বাড়তি যত্ন করলে ও শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেলে রসুনের এই সমস্যা প্রকট হওয়ার কথা নয়। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি, হাসিমপুর, কাচিনীয়া, গুলিয়ারা ও বালাপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মাঠজুড়ে রসুনের চাষ। গত বছরগুলোয় যেখানে রসুনের মাধ্যমে কৃষকদের ভাগ্যবদল হয়েছে কিন্তু চলতি মৌসুমে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জেঁকে বসা কুয়াশা ও শীতের তীব্রতায় রসুনের গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। এটি টিপবার্ণ রোগ বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ছয়টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১৬২০ হেক্টর, যা গতবছরে ছিল ১ হাজার ৫০০ হেক্টর।

জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এই বছর খরচ হয় প্রায় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটা বেড়ে গেছে বলে কৃষকরা জানান। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৪৫ থেকে ৬০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। সে হিসাবে এবার লাভের আশায় বেড়েছে রসুন আবাদ। গোয়ালডিহি জমির শাহপাড়া এলাকার রসুন চাষি রিশাদ শাহ বলেন, রসুনগাছের পাতার রং এমন পরিবর্তন হচ্ছে; দূর থেকে দেখলে মনে হয় সরিষার খেত। কীটনাশক ও স্প্রে ব্যবসায়ীদের পরামর্শে পরিচর্য়া করেও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। ১ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করছি এমনিতেই বীজ ও সার-কীটনশাকে যে খরচ হচ্ছে আবার এই সমস্যায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। হাসিমপুর পুলহাট এলাকার রাশেদ খান গোলাপ নামে একজন বলেন, রসুনের এই সমস্যায় কৃষকরা চিন্তায় পড়ে গেছেন। কেন না এই রসুন চাষে এখন অনেক খরচ আবাদের ক্ষতি হয়ে গেলেই লোকসান গুণতে হবে। এজন্য কৃষি বিভাগকে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান এই যুবক। বালাপাড়া গ্রামের জাকারিয়া ইসলাম বলেন, এমনিতেই চাষাবাদে খরচ বেশি তারউপর এই অবস্থা চিন্তায় রেখেছে। কৃষি বিভাগ তো বলছে যে আবহাওয়ার কারণে এমন হচ্ছে আতংকের কিছু নাই। খামারপাড়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ. ম. জাহেদুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সবসময় ক্ষেত পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করতেছি। আশাকরি কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, এটা স্বাভাবিক বিষয়। এবার শীত বেশি হওয়ায় টিপবার্ণ রোগটা বেড়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে এই অবস্থার উন্নতি হবে। কৃষকদের সচেতনতার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তাই আতংকিত না হয়ে যেকোনো প্রয়োজনে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত