ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তীব্র শীতে মরছে মৌমাছি

লোকসানের আশঙ্কায় চাষি
তীব্র শীতে মরছে মৌমাছি

ফুলে ফুলে ভরে গেছে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার সরিষা খেত। চারদিকে এখন শুধু সরিষা ফুলের গন্ধ। সেই ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা। তবে তীব্র শীতের কারণে ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে প্রতিদিন মরছে হাজারও মৌমাছি। এরফলে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসা মৌচাষিরা পড়েছেন বিপাকে। জেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৫ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এসব জমির পাশে ২৯ হাজার ১১৬ মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা। গতকাল জেলার বাঘাবাড়ি প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত মঙ্গলবার ছিল ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সরেজমিন দেখা গেছে, মৌচাষিরা সরিষাখেতের পাশে শত শত মৌ-বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে মধু সংগ্রহ ব্যাহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতের কারণে বাক্স থেকে মৌমাছি বের হচ্ছে না। যেসব মৌমাছি বাক্স থেকে বের হচ্ছে তীব্র শীতের কারণে সেগুলো মারা যাচ্ছে। আবার অনেক মৌমাছি বের হয়ে ঘন কুয়াশার পুনরায় বাক্সে ফিরতে পারছে না। বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেও রক্ষা করা যাচ্ছে না মৌমাছি। কথা হয় সাতক্ষীরার শ্যামনগরের হরিনগর গ্রাম থেকে মধু সংগ্রহে আসা ইয়াছিন আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি বছরই সিরাজগঞ্জের সরিষা খেত থেকে মধু সংগ্রহ করেন। এবছর তাড়াশের সগুনা ইউনিয়নে প্রায় ২৫০টি মৌ বাক্স স্থাপন করেছেন। কিন্তু শৈত্যপ্রবাহের কারণে বাক্সগুলো পাটের বস্তা ও গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। শীতে প্রতিদিন মৌমাছি মারা যাচ্ছে, বাক্স থেকে বের হতে পারছে না। ফলে মধু সংগ্রহও সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে এবার লোকসানে পড়বো। আরেক মৌচাষি বেল্লাল হোসেন বলেন, কর্মক্ষম মৌমাছি মরলে বেশি ক্ষতি। খারাপ আবহাওয়ার কারণে মৌমাছির বিভিন্ন রোগ ধরছে। যেমন- ঠান্ডা লাগা, পাতলা পায়খানা, ঘন কুয়াশার কারণে উড়তে না পারা। এসব কারণে চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছি। আর কিছুদিন এভাবে চললে লাভ দূরের কথা মূলধন উঠানোই কষ্টকর হয়ে যাবে। নাটোর থেকে আসা মৌচাষি শওকত বলেন, এখানে আগাম সরিষা আবাদ হয় শুনে অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম বেশি মধু সংগ্রহ করতে পারব। কিন্তু তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কর্মকর্তা শামিনুর ইসলাম বলেন, জেলায় প্রচুর সরিষা চাষ হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌচাষিরা আসেন। কিন্তু ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে মধু আহরণে সমস্যা হচ্ছে। এ জন্য কৃষি বিভাগ থেকে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত