অবৈধভাবে গুদামে বিপুল পরিমাণ পণ্য মজুত

ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে নওগাঁর মান্দায় অবৈধভাবে মজুতকৃত বিপুল পরিমাণ ভোজ্য তেল, ছোলা ও চিনিসহ প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের খাদ্যপণ্য জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত উপজেলার পরাণপুর ইউনিয়নের সোনাপুর ও কালিতলা বাজার এলাকার মাসুদ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের দুইটি গুদামে অভিযান পরিচালনা করে জব্দ করা হয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানের মালিক মাসুদ রানাকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আটক মাসুদ পরাণপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের মুনসুর আলীর ছেলে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু। মজুতবিরোধী এই অভিযানে অন্যদের মধ্যে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায়, মান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির মুন্সী ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার সন্ধ্যায় পরাণপুর ইউনিয়নে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য অবৈধ মজুতের সন্ধান পায় উপজেলা প্রশাসন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার সন্ধ্যায় সোনাপুর গ্রামের মাসুদ এন্টারপ্রাইজের গুদামে মজুতবিরোধী অভিযান চালানো হয়। ওই দুই গুদাম থেকে সয়াবিন তেল ১৭ হাজার ১৭০ লিটার, গম ২ লাখ ৩১ হাজার ৯০০ কেজি, আটা ৮ হাজার কেজি, অ্যাংকর ডাল (ছোলা) ৫০ হাজার ২৫০ কেজি, চিনি ১২ হাজার ৭৫০ কেজি, বুট ৪ হাজার ৭০০ কেজি, পামওয়েল তেল ১১ হাজার ৩২৪ কেজি, বিভিন্ন লবণ ৬ হাজার ৭৭৫ কেজি, ছোলা ৩৭৫ কেজি, মসুর ডাল ৪ হাজার ৫৭৫ কেজি, ময়দা ৭ হাজার ৪৭৪ কেজি, সরিষার তেল ৩ হাজার ৬৬৭ লিটার, মুড়ি ১ হাজার ৬০০ কেজি, গো-খাদ্য-খৈল ৯০০ কেজি, ভূষি ৮ হাজার ৬৮০ কেজি, তুষার ভূষি ৫ হাজার ৮১০ কেজি, চাকি আট ১৩ হাজার ৬৪০ কেজি, মুরগির খাদ্য- ৫ হাজার ৮৫০ কেজি ব্রয়লার ফিড জব্দ করা হয়। মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, ব্যবসায়ী মাসুদ রানা দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর মজুতবিরোধী অভিযান চালিয়ে তার অবৈধ দুইটি গুদাম থেকে প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৩৩ টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য জব্দ করা হয়েছে।

পরে গুদামগুলো সিলগালা করা হয়। এ ধরনের অপরাধে আর্থিক জরিমানা যথেষ্ট নয়। তাই মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর ৪ ধারা অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে বাদী হয়ে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জব্দকৃত খাদ্যপণ্য পরবর্তীতে কি করা হবে, সে বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। মান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, মজুতবিরোধী অভিযানের সময় ওই ব্যবসায়িকে আটক করা হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অনুমতিক্রমে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। বর্তমানে ব্যবসায়ী মাসুদ রানা পুলিশের নজরদারিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বাদী হয়ে মামলা করলে মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।