উপহার নিয়ে কামবালার বাড়িতে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নৌকার প্রচারণায় অংশ নেওয়া সেই ৯২ বছর বয়সি শ্রীমতী কামবালাকে দেখতে গেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর -২ আসনের বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কালীয়াগঞ্জ বাজারে নির্বাচনি পথসভায় শ্রীমতী কামবালা শতশত মানুষের বাধা উপেক্ষা করে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সেই সময় ১০ টাকার একটি নোট উপহার দিয়ে, কামবালা প্রতিমন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দিতে অনুরোধ করেন এবং এই টাকা নির্বাচনে ব্যয় করার কথা বলেন। এর বাইরে অন্যদের কাছেও নৌকার পক্ষে ভোট চান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পরপর দ্বিতীয়বারের মতো নৌপ্রতিমন্ত্রী হন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। নির্বাচন পরবর্তি সময়ে প্রথমবারের মতো বাড়িতে এসে গতকাল সকালে ছুটে যান সেই শ্রীমতী কামবালার গ্রামের বাড়ি গোদাবাড়ীতে। কামবালার ছনের ঘরের সামনে গিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী সাক্ষাৎ পেলে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কেঁদে দেন ৯২ বছর বয়সি কামবালা। নিজের উঠানে প্রতিমন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে কামবালা বলেন, ‘মুই খুব খুশি হইচো, মোর বেটা মোকে দেখিবার আইচ্চে।’ এ সময় কামবালার ছনের ঘরের সামনেই তাকে একটি শাল, শাড়ি, শীতের পোশাক সোয়েটার ও কামবালার বাধাই করা দুটি ছবি উপহার দেন প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া কামবালার ছেলের বউকেও উপহার দেন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

এ সময় কামবালা প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, ‘বেটা তুই মোর বাড়িত আইচ্চি, মুই খুব খুশি হইচু, মোর ঘরত বসিবার জায়গা নাই, আগিনাত বস। মোড়তায় এত কিছু আনিবার কি দরকার ছিলো। উত্তরে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি তো ছেলের মতোই, তাই দেখিবা আইচ্চু।’ পরে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি নির্বাচনের আগে এই এলাকায় একটি পথসভায় যখন আসলাম, তখন হাজার হাজার মানুষের ভীড় উপেক্ষা করে এই নব্বই ঊর্ধ্ব কামবালা আমার কাছে পৌঁছান, তখন তিনি একটি দশটাকা নোট উপহার দিয়ে আমাকে বলে নৌকায় ভোট দিতে এবং এই দশ টাকা নির্বাচনের খরচ হিসেবে কাজে লাগাতে। ‘আমি ছোট সময় থেকে নির্বাচনে কাজ করেছি প্রচার প্রচারণা করেছি, নিজের নির্বাচনে কাজ করেছি, কিন্তু একজন ভোটার আমার কাছে (নৌকার প্রার্থীর কাছে) ভোট চেয়েছে এই অভিজ্ঞতা প্রথম। নব্বই ঊর্ধ্ব একজন মহিলা নৌকার প্রার্থীর কাছে নৌকার ভোট চাইছেন, যে দাবিটা করেছেন এবং নির্বাচনি খরচ দিয়েছেন। সত্যিই আমি মুগ্ধ। আমি যখন নির্বাচিত হয়েছি তখনই ঠিক করেছিলাম, শ্রীমতী কামবালার বাড়িতে যাব। আজকে আসলাম, আসার পরে ওনার ব্যবহারে আমি আরও মুগ্ধ।’ খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘তিনি হচ্ছেন এই নির্বাচনে সবচেয়ে পবিত্র এবং দামি ভোটার। এই রকম একজন মানুষ যখন একজন প্রার্থীকে আর্শিবাদ দেয়, তখন সৃষ্টিকর্তা তার দিকে চোখ তুলে তাকায়। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা মানুষের জন্য যে কাজ করছেন এটা নব্বই ঊর্ধ্ব একজন মানুষের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন এর সাক্ষি হয়ে আছেন কামবালা। সেই যে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসেছে, নৌকাকে ভালোবেসেছেন, আজকে নব্বই বছরেও বার্ধক্য ওনাকে হার মানাতে পারেনি, বার্ধক্য উপেক্ষা করে নৌকা মার্কার প্রচারণা সভায় অংশ নিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য একটা শিক্ষা।’ সত্য এবং সুন্দরের জন্য কোনো কিছু আটকায় না, এটা কামবালা প্রমাণ করেছেন, আমি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি। পরে প্রতিমন্ত্রী বিরলের ধর্মপুরে জাতীয় চারণকবি উৎসব ২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।