ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হাতির পায়ে পৃষ্ট কৃষকের স্বপ্ন!

হাতির পায়ে পৃষ্ট কৃষকের স্বপ্ন!

ভারতের মেঘালয় রাজ্য ঘেষা দেশের উত্তরের শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী তিনটি উপজেলার গারো পাহাড়ের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘদিন থেকেই হাতির উপদ্রব চলে আসছে। হাতির আক্রমণে মারা যাচ্ছে মানুষ, ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের ফসল, গাছপালা ও ঘরবাড়ি। ওইসব এলাকার সীমান্তবাসী রাত জেগে পাহারা বসিয়েও হাতির কবল থেকে তাদের ফসলাদি রক্ষা করতে পারছে না। সর্বশেষ গত শনিবার গভীর রাতে জেলার ঝিনাইগীতি উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের গারো পাহাড়ি সীমান্ত এলাকা গোমরা গ্রামে এক দল হাতি সবজি বাগানে হামলা চালিয়ে প্রায় পাঁচ বিঘা জমির বিভিন্ন সবজি ক্ষেত বিনষ্ট করে। এতে ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকসহ অন্যান্য কৃষক এখন আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে কখন আবার হাতির দল হামলে পড়বে তাদের সবজি খেতে। এতে হাতির পায়ে পৃষ্ট হলো ওইসব কৃষকের স্বপ্ন। জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকেই শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার গারো পাহাড়ের প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ হাতির আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছেন। বিভিন্ন সময়ে হাতির হামলায় মারা পড়ছে মানুষ ক্ষতি হচ্ছে ফসল ও ঘরবাড়ি। এই বন্যহাতি যেমন মানুষের ক্ষয়ক্ষতি করছে পাশাপাশি ভুক্তভোগী মানুষও ক্ষোভে সেই হাতির উপরও হামলা চালিয়ে হাতি হত্যার ঘটনা ঘটছে। এজন্য হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব বিরামহীনভাবে চলছে। সর্বশেষ গত শনিবার গভীর রাতে জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকড়া ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেষা গোমরা গ্রামে একদল হাতি সবজি খেতে হামলা চালায়। এ সময় প্রায় ৫ একর জমির বেগুন, সিমসহ অন্যান্য সবজি ক্ষেত বিনষ্ট করে হাতির দল। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এখন দিশাহারা পড়েছে। কারণ তাদের অনেকেই বিভিন্ন এনজিওর থেকে ঋণ নিয়ে এসব সবজির আবাদ করেছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে ওই এলাকার বন বিভাগের রেঞ্জার রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। জেনে খোঁজ নেব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তিনি আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্তরা নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ পাবেন। এরইমধ্যে গত এক বছরে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি এলাকার হাতির আক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের হাতির অভয় আশ্রমসহ নানা পরিকল্পনা থাকলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত ওই প্রকল্প গ্রহণ করে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্বনিরসন করে সহাবস্থান তথা হাতির আক্রমণ থেকে সীমান্তবাসীকে রক্ষার জোর দাবি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত