যশোরে খেজুর গুড়ের মেলা

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  যশোর প্রতিনিধি

বিগত কয়েক বছর ধরে কমে গেছে গাছির সংখ্যা। পায় হারিয়েই যেতে বসেছে শত বছরের যশোরের ঐতিহ্য খেজুরগাছ, রস আর গুড়। তবে বিলুপ্ত প্রায় এই ঐতিহ্যের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়বারের মতো যশোরের চৌগাছায় আয়োজন করা হয়েছে, তিনদিনব্যাপী খেজুর গুড়ের মেলা। উপজেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগে এ অঞ্চলের গাছিদের উদ্বুদ্ধ করেছে। গত সোমবার দুপুরে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে গুড় মেলার উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার। বহু বছর ধরে যশোরের সুনামের সঙ্গে মিশে আছে খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য। প্রচলিত আছে, ‘যশোরের যশ খেজুরের রস’। যশোরের খেজুর রস-গুড়ের ঐতিহ্য কয়েকশ’ বছরের। সুনাম রয়েছে দেশ-বিদেশেও। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বিলুপ্তির পথে এ ঐতিহ্য। তাই খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রেখে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চৌগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তানিচুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস, চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নুর উদ্দিন আল মামুন হিমেল, চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলসারা ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী মাসুদ চৌধুরী প্রমুখ। গুড় মেলায় চৌগাছা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার একটি করে স্টল বরাদ্দ রাখা হয়। মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি বিভিন্ন প্রকারের পিঠার দুটি স্টল দেন। স্কাউটসের সদস্যরা মেলায় রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে বিক্রির ব্যবস্থা করেন। মেলায় অংশগ্রহণকারী উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের স্বরূপপুর-চাকলা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তিনি ১২০ কেজি গুড় নিয়ে এসেছিলেন। ৪০০ টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি করেছেন। পাতিবিলা ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের গাছি জামাত আলী বলেন, ‘আমি ৬০ বছর ধরে গাছ কাটি (রস সংগ্রহ করি)। রস-গুড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি। আমরা মারা গেলে ছেলেপেলে (সন্তান) কেউ গাছ কাটবে না। এটা অনেক কষ্টের কাজ। এ যুগের ছেলেরা শিখতে চায় না।’ চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা বলেন, খেজুর গুড়ের শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। ঐতিহ্য রক্ষার উদ্যোগ হিসেবে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আমরা গাছিদের পাশে আছি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, যশোরের খেজুর রস-গুড় আমাদের ঐতিহ্যের একটি অংশ। এ ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালন করার জন্য উপজেলা প্রশাসন গুড় মেলার আয়োজন করেছে।