ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মধ্যপড়া খনিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ

* অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা
মধ্যপড়া খনিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ

পাথর রাখার জায়গা না থাকায় ও বিক্রির গতি খুবই শ্লথ হওয়ায় দেশের একমাত্র মধ্যপাড়া খনির পাথর উত্তোলন গতকাল থেকে বন্ধ করা হয়েছে। ১১ মাসে প্রায় ৮৪ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে উত্তোলনকারী ঠিকাদার জিটিসির। দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু দাউদ মো. ফরিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় খনির উৎপাদন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখার ঘোষনা দিয়ে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেয়। ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সকাল থেকে খনির পাথর উত্তোলন বন্ধ হওয়ায় খনিতে কর্মরত প্রায় ৭ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতি মাসে উৎপাদন বাড়লেও পাথর বিক্রিতে গতি নেই। প্রতি মাসে প্রায় দেড় লাখ টন পাথর উৎপাদনের বিপরীতে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন পাথর।

এতে করে খনির ৯ ইয়ার্ডে বিভিন্ন সাইজের প্রায় ১০ লাখ টন পাথরের বিশাল মজুত গড়ে উঠেছে। খনি থেকে গত ডিসেম্বর মাসে রেকর্ড পরিমাণ ১ লাখ ৩৯ হাজার টন পাথর উৎপাদন করা হয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি দৈনিক পাথর উত্তোলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে খনির উৎপাদন ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি। খনিতে দৈনিক পাথর উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন। এর আগে কখনো একদিনে এত বিপুল পরিমাণ পাথর উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। প্রতি মাসে উৎপাদন বাড়লেও পাথর বিক্রিতে গতি নেই। এজন্য রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন করেও সময়মতো বিল পাচ্ছে না জিটিসি। এ অবস্থায় অর্থ সংকটে পড়ে সময়মতো উৎপাদন বিল না পাওয়ায় ৭ শতাধিক দেশীয় এখনি শ্রমিক-কর্মচারী ও প্রায় ১০০ বিদেশি খনি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে উৎপাদনকারি ঠিকাদারকে। মধ্যপাড়া পাথর খনি কর্তৃপক্ষ ও উৎপাদন ঠিকাদার জিটিসির মাঝে দর সমন্বয় নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়ায় পুরোদমে পাথর উৎপাদন করেও জিটিসি শতভাগ বিল পাচ্ছে না। খনি কর্তৃপক্ষ গেল বছরের মার্চ মাস থেকে ঠিকাদারের প্রতি মাসের উৎপাদন ও আনুষঙ্গিক খরচের বিলের ৭৫ শতাংশ দিচ্ছে। প্রতি মাসে ২৫ শতাংশ বিল কম দেয়ায় জানুয়ারী পর্যন্ত ১১ মাসে জিটিসির পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। চলতি জানুয়ারি মাসের বিলও সম্পূর্ণ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর ফলে জিটিসির পাওনার পরিমাণ বেড়ে হবে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। জানা গেছে, গত বছরের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১১ মাসে প্রায় ১০ লাখ টন পাথর উৎপাদন করেছে জিটিসি। গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৭ কোটি ৬০ লাখ কম দেয়া হয়েছে, যা প্রদত্ত বিলের ২৫ শতাংশ। দর সমন্বয় না হওয়ায় খনি কর্তৃপক্ষ এভাবে জিটিসির টাকা আটকে রেখেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত