সরকারি অনুমতি ছাড়াই যশোর নতুন উপশহরে গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। যখন যার ইচ্ছা তখন সে গাছ কাটছে। গত শুক্রবার সকালে উপশহর বাজার থেকে তিনটি গাছ কাটা হয়েছে। এর আগেও উপশহর এলাকা থেকে একাধিক গাছ কাটা হয়েছে। উপশহর সারথী মিল এলাকা ও উপশহর কবরস্থান, উপশহর পার্কসহ উপশহরের বিভিন্ন স্থান থেকে একাধিক গাছ কাটা হয়। এ বিষয়ে দেখার কেউ নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপশহর মসজিদ কমিটি মসজিদের উন্নয়নের নামে একের পর গাছ কেটে সাবাড় করছে। গাছ কাটার ক্ষেত্রে সরকারি কোনো নীতিমালা মানা হচ্ছে না। এর আগেও মসজিদ কমিটি মার্কেট নির্মানের অজুহাতে উপশহর বাজারের রাস্তার পাশ থেকে অবৈধ ভাবে বেশ কয়েকটি গাছ কেটে বিক্রি করে দেয়। গত শুক্রবারও মসজিদের উন্নয়নের নামে মার্কেট নির্মাণের অজুহাতে তিনটি গাছ কেটে সাবাড় করে। তিনটি গাছের আনুমানিক মূল্য লাখ টাকা। গাছ কাটার বিষয়ে মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনর রশিদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মসজিদের উন্নয়নের জন্য গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কেটে ইতিমধ্যে গাছ বিক্রি করেও দেয়া হয়েছে। গাছ কাটার ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা মানা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে প্রথমে তিনি অনুমতি নেয়া হয়নি বলে জানালেও পরক্ষণেই বলেন, ফাইল দেখতে হবে। উপশহর বি ব্লক বর্তমান মসজিদ কমিটির মেয়াদ ৬ মাস আগে উত্তীর্ণ হয়েছে। অথচ কমিটি না ভেঙে অবৈধ কমিটি দিয়ে মসজিদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় অনেকের মধ্যে ক্ষেভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া মসজিদ কমিটি গঠন করার সময় নির্বাচন ছাড়াই অবৈধভাবে পকেট কমিটি গঠন করা হয়। যে কারণে মসজিদ কমিটির স্বচ্ছতা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। গাছ কাটার বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ যশোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রিদুয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান। গতকাল শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে লোক পাঠাবেন বলে জানান। উপশহর এলাকায় গাছকাটা নতুন কোনো বিষয় না। এর আগেও উপশহর এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে বহু গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। তখনো গাছ কাটার বিষয়ে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রিদুয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি একই কথা বলেন। গাছ কাটার বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবুল কালামের কাছে অনুমতি নেয়া হয়েছে কি না- জানতে চাওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। বাংলাদের বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন আইনে (২০২২) বলা হয়েছে ব্যক্তি মালিকানায় লাগানো গাছ কাটতেও সরকারের অনুমতি নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদনের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হবে। আবেদনের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তর গাছের দাম নির্ধারণ করে দেবে। এরপর গাছ কাটতে হবে। অথচ উপশহর এলাকায় গাছ কাটতে সরকারি কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয় না। গাছ কাটার ব্যাপারে স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।