ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দিনাজপুরের সীতাকোট বৌদ্ধ বিহারের বেহাল অবস্থা

সংস্কারের দাবি এলাকাবাসীর
দিনাজপুরের সীতাকোট বৌদ্ধ বিহারের বেহাল অবস্থা

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় ঐতিহাসিক নিদর্শন সীতাকোট বৌদ্ধ বিহারের বেহাল অবস্থা। সংস্কারের অভাবে ভেঙে যাচ্ছে মূল স্থাপনা। বেষ্টনী না থাকায় পরিণত হয়েছে চারণ ভূমিতে। দীর্ঘদিনেও দর্শনার্থীদের জন্য করা হয়নি সৌন্দর্যবর্ধন কাজ। তাই পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সৌন্দর্যবর্ধন কাজসহ নিদর্শনটি রক্ষায় দ্রুত সংস্কার দাবি এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী জানান, নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানের শালবনসংলগ্ন উপজেলার ফতেপুর মাড়াষ মৌজায় প্রায় ৩ একর ভূমির উপর অবস্থিত সীতার কোট বিহার। জনশ্রুতি রয়েছে রামের পত্নী সীতাকে পঞ্চবটীর বনের গভীরে বনবাস দিয়ে তার থাকার জন্য তৈরি করে দেয়া হয়েছিল একটি কুঠুরি। আর সেই কুঠুরিই হলো সীতার কোট। এমনটি দাবি স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের।

প্রায় সাড়ে তিনশ’ বর্গফুট ফুটের বিহারটিতে ছোট-বড় ৪১টি কক্ষ রয়েছে। নিপুন হাতের গাঁথুনী ইমারতের লম্বা, মধ্যম ও ছোট ছোট ইট এবং চুন সুরকি দ্বারা বিহারটি নির্মিত। জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অনুসন্ধানকারী একটি দল নির্দশনের আংশিক অংশ খননের পর নিশ্চিত হয় এটা একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। কিন্তু হিন্দুধর্মাবলম্বীরা এখনও তাদের তীর্থস্থান মেনে আসেন এই বিহারে। খননের সময় বিহারের কিছু অংশ সংস্কার করা হলেও পরে আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় ঐতিহাসিক এ নির্দশনটির মূল স্থাপনা ভেঙে যাচ্ছে। একজন কেয়ারটেকার থাকলেও সীমানা বেষ্টনী না থাকায় বিহারটি চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। অপর দিকে বিপুল পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও বিহারে নেই কোনো পানি, শৌচাগারসহ বিশ্রাম নেওয়ার নেই কোনো ব্যবস্থা। ফলে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ বিপ্লব কুমার সাহা জানান, প্রতি বছর বৈশাখ মাসে আশপাশের কয়েকটি জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখানে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমাবেত হন। ফলে তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে বিহারে আগত দর্শনার্থীদের জন্য পানি, স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও বিশ্রামাগার নির্মাণের দাবি জানান। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান জানান, সীতারকোট বিহারটি সংস্কার ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করণের লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। ইতিহাসসমৃদ্ধ ও পর্যটন কেন্দ্রের অপার সম্ভাবনাময় এ বৌদ্ধ বিহারটি রক্ষায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, মূল স্থাপনা সংস্কার ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ দর্শনার্থীদের জন্য পানি ও স্যানিটেশন ব্যাবস্থা করে ঐতিহাসিক স্থানটিকে রক্ষায় কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসবে এমনটি প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত