কদর বাড়ছে কালাই রুটির

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রামগঞ্জে, বাড়িতে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে কালাই রুটির দেখা মেলে। যুগ যুগ ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের পছন্দের খাবারের তালিকায় আছে ‘কালাইয়ের রুটি’। চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাজশাহী বিভাগে এ রুটির কদর রয়েছে অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে শীতকালে এর কদর একটু বেশি বাড়ে। আগে শহর থেকে লোকজন গ্রামে কালাই রুটি খেতে যেতেন। কিন্তু বর্তমানে শহরেও বাণিজ্যিকভাবে বানানো হচ্ছে কালাই রুটি। স্বাস্থ্যসম্মত ও রুচিশীল হওয়ায় দেশি-বিদেশিদের এখন পছন্দের খাবার এ রুটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেশের উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কালাই (কলাই ডাল) চাষ হয়ে থাকে। আমের পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ কালাইয়ের জন্যও প্রসিদ্ধ। আবার এখানকার কালাইও দেশসেরা। এ কালাইয়ের সুনামকে কাজে লাগিয়ে ভালো ব্যবসার উদ্দেশে জেলা শহরে গড়ে উঠেছে কালাই রুটির দোকান। দোকানগুলোতে প্রচুর কালাই রুটি বিক্রি হয়। এসব দোকানে কালাই রুটির সঙ্গে থাকে বেগুন ভর্তা, মরিচ ভর্তা, হাঁসের মাংস, গরুর মাংসসহ মুখরোচক আরও অনেক উপকরণ। এছাড়া বর্তমানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা শহরের রাস্তার পাশে, ফুটপাতের দোকানগুলোতে কালাই রুটি বিক্রি শুরু হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহরগুলোতে আগে এ রুটি বিক্রি হলেও এখন গ্রামেও বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হচ্ছে। অনেকে কালাই রুটি বিক্রি করে মাসে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। এখন ছোট বড় মিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই শতাধিক কালাই রুটির দোকান গড়ে উঠেছে। বিকাল হলেই মানুষ ছুটে আসেন পছন্দের কালাই রুটি খেতে। সাধারণত দুই কেজি কালাই আটার সঙ্গে ১০ কেজি চালের আটা মিশিয়ে পানি ও লবণ দিয়ে ভালো করে মেখে বানানো হয় কালাই রুটি। তবে স্বাদের জন্য কেউ কেউ কালাই আটা একটু বেশিও দিয়ে থাকেন। শিবগঞ্জ বাজারের সম্রাট হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁর মালিক মো. মানিক বলেন, আমার এখানে প্রতিদিন আট থেকে ১০ জন এ রুটি তৈরি করে। তারা প্রতিনিয়ত রুটি তৈরি করে বিক্রি করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ হাজার টাকার কালাই রুটি বিক্রি হয়। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। তাছাড়া সকালেও অনেকে তেলের খাবারের বিকল্প হিসেবে এখানে কালাই রুটি খেয়ে থাকে। তবে শীতকালে এ রুটির চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, আমরা এ শহরে অত্যন্ত ভালোমানের কালাই রুটি বিক্রি করি। কলেজ শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এসেছেন কালাই রুটি খেতে। তিনি জানান, তিনি প্রতিদিনই কালাই রুটি দিয়ে সকালে নাস্তা করেন। বাড়িতে কোনো কারণে বানানো না হলে দোকানে এসে কালাই রুটি খান। আশিস কুমার বাড়ালা নামে এক ক্রেতা বলেন, খড়ির (লাকড়ি) চুলায় এ রুটি বেশি ভালো ও সুস্বাদু হয়।