কেশবপুরে ২০ গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী বাজার এলাকার ২০ গ্রামের ৫০ হাজারের বেশি মানুষের চলাচলের একমাত্র উপায় হচ্ছে কপোতাক্ষ নদের ওপর একটি বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো দিয়েই তারা ঝুঁকি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলাচল করে আসছেন। সাঁকোটির অবস্থান কেশবপুর উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে কপোতাক্ষ নদের ওপর। স্থানীয় বাসিন্দারের ভাষ্য, নদের ওপর তৈরি প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ সাঁকোটি তাদের নিজেদের উদ্যোগে তৈরি। এই সাঁকো দিয়ে কেশবপুর উপজেলার মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে কলারোয়া ও সাতক্ষীরায় যাতায়াত করেন। ওই অঞ্চলের মানুষও কেশবপুরে আসেন এই সাঁকো ব্যবহার করেই। তারা বলছেন, ত্রিমোহিনী বাজার এলাকার এই জায়গাটিতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য তারা স্বাধীনতার পর থেকেই দাবি জানিয়ে আসছেন। দাবি পূরণে বিভিন্ন সময় তাদের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, কপোতাক্ষের ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন নদ তীরবর্তী ত্রিমোহিনী, চাদড়া, মির্জানগর, সাতবাড়িয়া, গোপালপুর, জাহানপুর, দৌলতপুর, ছলিমপুর, দেয়াড়া, কাশিয়াডাঙ্গা, চালনদিয়া, পাটুলিয়া, গড়গড়িয়া, উলুডাঙ্গা, উলুশী, জানখা, বাজে খোরদো, মাঠপাড়া, আবাদপাড়া, পাকুড়িয়া, খোরদো ও বাটরা গ্রামের ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। সেতুর অভাবে এই সাঁকো ব্যবহারের জন্য অনেককে অন্তত ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। ফলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তির পাশাপাশি আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। ত্রিমোহিনী বাজারের ব্যবসায়ী বাবলু রহমান জানান, জনসাধারণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী দুই পাড়ের মানুষ নিজেরা চাঁদা দিয়ে বাঁশ কিনে সাঁকোটি নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন মেরামতের অভাবে সাঁকোটির অবস্থা এখন নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এলাকার আরেক ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান বলেন, এই এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের তা নিয়ে মাথাব্যাথা নেই। প্রতিবার সংসদ নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু তা আশ্বাসই থেকে যায়। ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বলেন, এখানে একটি সেতু নির্মিত হলে কেশবপুর ও কলারোয়া উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থা ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন হবে। কেশবপুর উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলছেন, ত্রিমোহিনী বাজার সংলগ্ন এই জায়গাটিতে সেতু নির্মাণের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে। কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তহিন হোসেন বলেন, এই এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।