কার্প-গলদা চিংড়ির মিশ্রচাষে স্বাবলম্বী অনেক মৎস্য চাষি

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

দিনাজপুরে কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষ করে ভাগ্য ফিরেছে অনেক মৎস্য চাষির। ছোট পরিসরে শুরু করে এখন বড় পরিসরে রুই, কাতল, মৃর্গেল, সিলভারকাপ, চিতলসহ বিভিন্ন্ প্রজাতির কাপ মাছের সঙ্গে গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষ করে অনেকে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনে স্বাবলম্বী হয়েছেন। অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষের কারণে আশানুরূপ বড় হচ্ছে চিংড়িগুলো। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ার সফলতা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষে উৎসাহিত হচ্ছে অনেকে। সরেজমিন দেখা গেছে, দিনাজপুর সদর উপজেলার উথরাইল দামপুকুর গ্রামে ১০ শতাংশ জমিতে কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষ করে সফলতা পেয়েছেন, গৃহিণী মোছা. মিনারা খাতুন। তিনি জানান, ‘অন্যান্য কার্প মাছের সঙ্গে প্রথমে ৪০০ চিংড়ি পোনা ছেড়ে প্রায় ৩০০ গলদা চিংড়ি মাছ পেয়েছি। গলদা চিংড়িগুলো আকার এবং ওজনে হয়েছে বেশ বড়। ১২-১৫টি চিংড়ি মাছ এক কেজি ওজন হয়েছে। তবে, তীব্র শীতে কিছু মাছের ক্ষতি হয়েছে। দুর্বল হয়ে গেছে। তাই অধিকাংশ চিংড়ি তুলে নিয়েছি। ভাবছি এগুলো সব তুলে নেয়ার পর আবারো পোনা ছাড়ব।’ শুধু মিনারা নয়, অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ার সফলতা দেখে অনেকে কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষ করছেন। মাছ চাষিরা বলেন, গলদা চিংড়িতে তেমন কোনো রোগবালাই নেই। কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষে সহায়তা করে আসছে, মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি কর্মণ্ডসহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ’র এবং মহিলা বহুমুখী শিক্ষা কেন্দ্র-এমবিএসকে।চিংড়ি পোনা সরবরাহ পাশাপাশি উন্নত ব্যবস্থাপনায় কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষে প্রদর্শনীতে মাঠ দিবসের আয়োজনও করছেন, প্রতিষ্ঠানগুলো। মহিলা বহুমুখী শিক্ষা কেন্দ্র-এমবিএসকে’র মৎস্য কর্মকর্তা মো. রায়হান আলী জানান, ‘কর্মণ্ডসহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ’র সহায়তায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আওতায় কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষ হয়ে আসছে। সদস্যদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষের কারণে আশানুরূপ বড় হচ্ছে চিংড়িগুলো। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ার সফলতা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষে উৎসাহিত হচ্ছে অনেকেই। আগামীতে এই গলদা চিংড়ি চাষের পরিধি আরো বাড়বে বলে জানা গেছে।’ দিনাজপুর মৎস্য অধিদপ্তের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান জানান, ভৌগলি দিকদিয়ে দিনাজপুরের আবহাওয়া ও পানির গুণগতমান গলদা চিংড়ি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ জেলার পুকুরে কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষে পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, কৃষি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে ব্যাপক সাফল্য বয়ে এনেছে। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ জেলায় কার্প-গলদা চিংড়ি মাছের মিশ্রচাষ। এতে লাভবান হচ্ছেন, মাছ চাষিরা। তিনি বলেন, ‘দিনাজপুরের মতো দেশের অন্যান্য জেলায় গলদা চিংড়ির চাষ বৃদ্ধি পেলে যেমন কর্মসংস্থান ও আমিষের জোগান বাড়বে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রার আয়ও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।