বড়য়ান বিলে পলো উৎসব

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পলো উৎসব। গত শনিবার সকাল থেকে উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের বড়য়ান বিলে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সহস্রাধিক মৎস্য শিকারি পলো উৎসবে অংশ নেন। বাদ যায়নি শিশুরা। একসঙ্গে সহস্রাধিক মানুষের মাছ শিকারের দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন দর্শনার্থীরা। আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহিবুল হোসেন উজ্জ্বল জানান, আতুকুড়া গ্রামের বড়য়ান বিলে যুগ যুগ ধরে পলো উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। একসময় জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই ও বানিয়াচং উপজেলায় এ প্রতিযোগিতার প্রচলন ছিল। তখন বিভিন্ন নদী, বিলে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। শুধু মাছ ধরা নয়, এর মাঝে ছিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের মিশ্রন। মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম এটি। বর্তমানে এটি হারিয়ে গেলেও আতুকুড়া গ্রামবাসী এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পলো উৎসবের তারিখ নিধারণ করা হয়। আগেই থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মৎস্য শিকারিরা জাল, পলো ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে বিলের পাড়ে ভিড় করেন। সকালে বিলে মাছ শিকারে নামেন তারা। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী চলে মাছ শিকার। মহিবুল হোসেন বলেন, বিলগুলোতে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন বন্ধ করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে যেসব বিল রয়েছে সেগুলোতেও এ উৎসব চালু করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি। বানিয়াচংয়ের বাসিন্দা নাসিম আহমেদ বলেন, ?‘শখের বশে প্রতিবছর পলো উৎসবে অংশ নিই। এবার অংশ নিয়ে ছোট-বড় চারটি মাছ পেয়েছি। আমার মতো অনেকেই মাছ পেয়েছেন। তবে আগের তুলনায় এখন বিলে সেরকম মাছ নেই। পলো উৎসবের আগেই বিলের ইজারাদার মাছগুলো জাল ফেলে মেরে ফেলেন।’ মাছ শিকারি সাদত মিয়া বলেন, ‘পলো উৎসবে অংশ নিয়ে খুবই আনন্দ লাগছে। আমরা চাই আমাদের এ ঐতিহ্য যেন অনন্তকাল ধরে চলতে থাকে।’ দর্শনার্থী মিজানুর রহমান বলেন, ‘পলো উৎসব দেখতে এসেছি। এটি আমাদের এলাকার বিনোদনের একটি মাধ্যম। তবে কেউ মাছ পেয়েছে, আবার কেউ পায়নি। আমি অংশ না নিলেও মানুষের এ উৎসব দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে।’ আয়োজক কমিটির সভাপতি সোহেল মিয়া বলেন, আমাদের সংগঠনের পোশাক পরে প্রায় ২০০ জন সদস্য পলো উৎসবে অংশ নিয়েছেন। তাদের কেউ মাছ পেয়েছেন, আবার কেউ পাননি। তবে এখানে শুধু মাছ পাওয়া না পাওয়ার বিষয় নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য। আমাদের বিনোদনেরও মাধ্যম।