লালকাঁকড়ার বিচরণভূমি মান্দারবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমগীর সিদ্দিকী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)

সাতক্ষীরা জেলায় অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের এক নয়নাভিরাম বেলাভূমি লালকাঁকড়ার বিচরণ স্থান মান্দারবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত। বাংলাদেশে যে মান্দারবাড়িয়া নামে একটা সমুদ্রসৈকত আছে তা বেশির ভাগ মানুষের কাছেই অজানা। হাড়িয়াভাঙ্গা নদীর তীরে মান্দারবাড়িয়ায় বন আর তার সম্মুখে বঙ্গোপসাগরের তীরজুড়ে নয়নাভিরাম বালুকাময় সমুদ্রসৈকত যেন প্রকৃতির এক অপার সৃষ্টি। প্রায় ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মান্দারবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত শুধুমাত্র বিশেষ ভ্রমণকারীদের জন্য উপযুক্ত যারা কষ্ট স্বীকার করে বঙ্গোপসাগরের মায়াবী জলরাশির অবিশ্রান্ত গর্জন শুনতে রাজি আছেন। কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়া, ইনানী, সেন্টমার্টিনসহ বঙ্গপোসাগরের অনেকগুলো সৈকত হয়তো দেখেছেন। সুন্দরবন ভ্রমণে এসে এত বড় একটি সৈকতের দেখা হয়ে যাবে তা হয়তো কেউ ভাবতেও পারবে না। যাত্রাপথের নদীর উভয় পাশেই দেখা যাবে চিরহরিৎ সুন্দরবনকে। চোখ জুড়িয়ে যাবে যেন সবুজের রাজ্য। সুন্দরী, কেওড়া, বাইন, পশুর, গরান, গোলপাতা, সিংড়া, হেতাল, খলশী, গেওয়া গাছের সংমিশ্রনে এখানে ঘটেছে সবুজের মিলনমেলা। চলার পথে দেখো মিলবে পানকৌড়ি বালিহাসসহ নানা প্রজাতির পাখি বন্য শুকর বানর। ভাগ্যে থাকলে নদীর চরের বনে দেখতে পারেন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গর্জন আর লাল কাঁকড়ার বিচরণ। মনে হবে আপনার আগমনে বানরগুলো অভিন্দন জানাচ্ছে। বানরের জন্য মুড়ি বা বিস্কুট নিতে ভুলবেন না, ওরা ছুটে আসবে দল বেঁধে। খাবার না পেলে ওদের নেরাশানলে পড়তে পারেন আপনি। মান্দারবাড়িয়া অন্য সৈকতগুলো হতে একেবারেই আলাদা। অপূর্ব সৌন্দর্য ঘেরা এক জায়গা। পেছনে বাঘের ভয় আর সামনে অসম্ভব ভালোলাগার হাতছানি দেয়া সমুদ্র, বিস্তীর্ণ সৈকত, সবুজ রহস্যে ঘেরা বন। পর্যটকরা এখানে নির্জন সৈকতে নিজেকে খুঁজতে থাকবেন ভিন্ন এক অনুভূতি। সৈকতের বুকে হরিণ আর বাঘের পায়ের ছাপ আগ্রকে আরো বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুন। তাই যারা ভ্রমণবিলাসী আর অ্যাডভেঞ্চার করত আগ্রহী তারা ঘুরে আসুন, দেশের অজানার সুন্দর সৈকত মান্দারবাড়িয়া থেকে আর নিজের নামটা লিখিয়ে রাখুন নতুনদের তালিকায়।