ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেশবপুরে থামছে না মাদক ব্যবসা

কেশবপুরে থামছে না মাদক ব্যবসা

যশোরের কেশবপুরে মাদকের ব্যবসা থামছে না। মাদকে জড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরাও। মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিস্তার বেড়েছে। যেন মাদকে ভাসছে কেশবপুর। কেশবপুর পৌর শহরকেন্দ্রিক এলাকাসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেও এর ভয়াবহতা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। উঠতি বয়সি যুবক, শিক্ষার্থীরাও জড়িয়ে পড়ছে মাদকের সঙ্গে। এর মধ্যে উপজেলার মজিদপুর, বায়সা, প্রতাপপুর, শ্রীফলা, মঙ্গলকোট, চুয়াডাঙ্গা, কর্ন্দপুপুর, আলতাপোল, হাসানপুর, টিটাবাজিতপুর, বুড়িহাটি, চিংড়া, সাগরদাঁড়ি, পাঁজিয়া, ব্রম্মকাটি, বালিয়াডাঙ্গা ও পৌর এলাকায় প্রতিনিয়ত স্থানীয় ও বহিরাগত যুবকরা এসে মাদক ব্যবসাসহ সেবন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সময়ে কেশবপুর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে মাদক উদ্ধারসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করলেও থামছে না মাদকের ছোবল। থানা সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাস থেকে গত রোববার পর্যন্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার বিভিন্ন মাদক বিক্রির সম্ভাব্য স্থানগুলোতে হানা দিয়ে থানা পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা মাদকদ্রব্যসহ গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ পিচ ইয়াবা। তারা হলেন, উপজেলার মাগুরখালি গ্রামের মৃত আসাদুল মোড়লের ছেলে মরশেদ আলম ও পাঁজিয়া গ্রামের লুৎফর গাজীর ছেলে মিন্টু হোসেন। পুলিশ বলছে, কেশবপুরে মাদকের সঙ্গে যুক্ত হলে কোনো ব্যক্তিই ছাড় পাবে না। কেশবপুর উপজেলার আবুল বাসার বলেন, এরই মধ্যে উপজেলার মধ্যকুল এলাকায় এক মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কেশবপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা হলো সরসকাটি ঘাট, সাগরদাঁড়ি ঘাট ও চিংড়া ঘাট। আর এ ঘাট দিয়ে ভারত থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবা, ফেনসিডিল আমদানি করে থাকে। এ উপজেলায় মাদকদ্রব্য বিকিকিনি বৃদ্ধি পাওয়ায় সচেতন মহল বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যুবক বলেন, কেশবপুর পৌরসভার বায়সা কালাবাসা মোড়, শীতলাতলা মোড়, তেলপাম্প, ট্রাকটার্মিনাল, ব্রম্মকাটি, বালিয়াডাঙ্গা এলাকা ও কেশবপুর সদর ইউনিয়ন, মঙ্গলকোট, পাজিঁয়া, সাগরদাঁড়ি, বিদ্যানন্দকাটি, হাসানপুর, সাতবাড়িয়া, ত্রিমোহিনী, সুফলাকাটি, গৌরিঘোনা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্পটে সন্ধ্যার পর স্থানীয় এবং বহিরাগতদের নিয়ে ইয়াবা ও গাঁজা সেবনের আড্ডা জমে ওঠে। উপজেলার মঙ্গলকোট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলকোট, বসুন্তিয়া, পাথরা, বড়েঙ্গা, পাচারই, কর্ন্দপপুর ও রামকৃষ্ণপুর এলাকার দিকে মাদক বিক্রেতা এবং সেবনকারীদের আনাগোনা দেখা যায়। উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর পলাশ বলেন, মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সী যুবক। প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার্থীসহ যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। কেশবপুর উপজেলা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এখনই যদি এদের রুখে দেওয়া না যায়, তাহলে যুবক ও শিক্ষার্থীরা ধ্বংস হয়ে যাবে। কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেছেন। তিনি আরও বলেন, পৌর শহরসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ব্যাপক হারে মাদক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহিরুল আলম বলেন, মাদকের সঙ্গে কোনো আপস নেই। এরই মধ্যে দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কেশবপুরে মাদক বিক্রি ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত