ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বালু ফেলে জিওব্যাগ চুরি

বর্ষায় আবারো ভাঙতে পারে পদ্মা

বর্ষায় আবারো ভাঙতে পারে পদ্মা

পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার উত্তর তারাবুনিয়া থেকে চরমোহন পর্যন্ত নদীপাড়ে বালুভর্তি করে ফেলা হয়েছিল হাজার হাজার জিও ব্যাগ। শীত মৌসুমে পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে নদীতে ফেলা হাজার হাজার জিওব্যাগ নদীর পাড়জুড়ে জেগে উঠেছে। এ সুযোগটিই কাজে লাগিয়ে শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে বসতবাড়ির আঙিনার বেষ্টনী নির্মাণ, ঘরের মেঝের কার্পেট ও গবাদি পশুর গরম কাপড় তৈরি করতে একশ্রেণির মানুষ বালু ফেলে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে এসব ব্যাগ। ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে আবারো দেখা দিতে পারে নদীভাঙন। স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর ভাঙনে কয়েক হাজার মানুষ বসতবাড়ি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রচেষ্টায় ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তর তারাবুনিয়া থেকে চরমোহন পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে জিওব্যাগ ফেলা হয়, যা ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হয়ে গত বর্ষায় শেষ হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজটি সমাপ্ত করে বাঁধ প্রকল্পের আওতাধীন এলাকাকে সোনার বাংলা অ্যাভিনিউ নামকরণ করে, যা স্থানীয়দের বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়। বাঁধ প্রকল্পের সব অংশেই সেলাই কেটে ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটলেও চরভাগা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড এলাকায় জমেছে জিওব্যাগের বালুর স্তূপ।

দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আসছে বর্ষায় আবারো ভাঙনের মুখে পড়বে পদ্মার চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষোভ জানিয়ে বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আসছে বর্ষায় আবারও ভাঙনের শিকার হতে পারে পদ্মার চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। আকলিমা বেগম নামের আরেকজন বলেন, জিওব্যাগ ফেলার কারণে আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। এখনো এক বছর হয়নি সরকার ব্যাগগুলো ফেলেছে। হরিলুটের মতো সকাল-বিকাল জিওব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে মানুষ। যাদের বাড়িঘর রক্ষার জন্য সরকার জিওব্যাগ ফেলল, তারাই এখন সেলাই কেটে ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। চরভাগা এলাকার নদীপাড়ের বাসিন্দা খবির কবিরাজ বলেন, স্থানীয় অসচেতন মানুষ সাময়িক প্রশান্তির জন্য দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জিওব্যাগ কেটে ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে। এলাকার নারী-পুরুষ সবাই কাঁচি দিয়ে কেটে বালু ফেলে ব্যাগ নিয়ে যায়। নিষেধ করলেও কেউ কথা শোনে না। আমরা কী করব? চরভাগা ইউপির সদস্য বোরহান ব্যাপারী বলেন, জিওব্যাগ চুরির ঘটনা আমাদের নজরে আসার পরপরই আমরা স্থানীয় মসজিদের মাইকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাগ না নিতে এলাকাবাসীকে অনুরোধ করে সতর্ক করে দিয়েছি। তারপরও কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না। যে যার মতো করে ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে।

জিওব্যাগ নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড শরিয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, বিষয়টি জানার পরই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন মহলকে বলেছি অসচেতন এসব মানুষদের সচেতন করতে মাইকিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করতে। এরপরও যদি তারা সচেতন না হয়, তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত