ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শার্শায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হুমকির মুখে পরিবেশ

শার্শায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হুমকির মুখে পরিবেশ

যশোরের শার্শায় অবাধে একের পর এক অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ আর বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশের ভারসাম্য। অবৈধ মাটি ও ইটবাহী যানবাহনের চাপায় প্রতিনিয়ত জীবন ঝরছে মানুষের। এতে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে বছরের পর বছর এ অবস্থা শার্শার সব কটি ইউনিয়নে বিরাজ করলেও টনক নড়েনি প্রশাসনের।

অভিযোগ রয়েছেন সংশিষ্টদের ঘুষ বাণিজ্যের প্রতিকার হচ্ছে না। তবে উপজেলা প্রশাসন এসব কর্মকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে বলছেন দ্রুত এসব অনিয়ম রোধে আরো শক্তভাবে কাজ করবেন তিনি। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ প্রভাসক মনির হোসেন বলেন, কৃষি জমির পাশে ইট ভাটা থাকলে ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায় ও জীববৈচিত্র্য ক্ষতির মুখে পড়ে। এছাড়া নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলনে যে কোনো সময় ভূমি ধসের ঘটনাও ঘটতে পারে। এতে এসব ইট ভাটা নির্মাণ বা বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে নিয়ম মানতে হবে।

উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ ডিসেম্বর নয়ন কুমার রাজবংশী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদান করলেও এখন পর্যন্ত কোনো অবৈধ স্থাপনা, অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি কোনো অভিযান পরিচালনা করেননি। অভিযোগ আছে প্রভাবশালীরা উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দেদারছে বালু, মাটি উত্তোলন, ইটভাটা, করাতকল, ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছে। শার্শা উপজেলা ব্যাপী অবাধে চলছে অবৈধ ১৯টি ইটভাটা। অনুসন্ধানে জানা গেছে ১৯টি ইটভাটার না আছে পরিবেশ ছাড়পত্র, না আছে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন। এরপরও শার্শায় কোনো অদৃশ্য শক্তিতে এসব অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। একাধিক ভাটা আছে সরকারি স্কুল ও আবাসিক এলাকার মধ্যে। গত বছর ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট দেশের সব অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে জেলা প্রশাসকদের ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চললেও শার্শা উপজেলাতে চিত্র ভিন্ন।

এখানে প্রশাসন অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। এছাড়াও আবাসিক এলাকার মধ্যে অবৈধ করাতকল থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা ব্যাপী চলছে মাটি বালু উত্তোলনের মহাউৎসব কোনো অভিযান না থাকার কারণে কৃষিজমি থেকে প্রথমে গভীর করে মাটি উত্তোলন করে ইটভাটার চাহিদা মিটাচ্ছে। হাওর-বাঁওড় ও গভীর পুকুর থেকে দেদারছে চলছে বালু উত্তোলন। এছাড়াও শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়ন, কায়বা ইউনিয়ন, পুটখালী ইউনিয়ন, বাঁগআচড়া ইউনিয়ন, লক্ষণপুর ইউনিয়ন, শার্শা ইউনিয়ন, উলশী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে মাটি এবং বালু উত্তোলন করার একাধিক অভিযোগ থাকলেও নেই কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশীকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমিও এমন কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি এবং কয়েকটি ইটভাটার সঙ্গে কথা বলেছি তারা জানিয়েছেন বর্তমানে লাইসেন্স বন্ধ থাকায় তারা লাইসেন্স করতে পারছেন না। আর মাটি এবং বালুর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে, সেটা সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে জানাবেন। এগুলো দেখার জন্য তিনি আছেন। তথ্য বলছে, গত ৫ বছরে মাটি ও বালুবাহী অবৈধ যানবাহনের চাপায় ১০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে। যার অধিকাংশ রয়েছে শিশু। এছাড়া দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অনেকেই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত