ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কামারপাড়ায় দুর্যোগের ঘনঘটা

কামারপাড়ায় দুর্যোগের ঘনঘটা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে শতবর্ষীয় কামারপাড়ায় নেমেছে দুর্যোগের ঘনঘটা। নানা সংকটে জর্জরিত কামার শিল্প। বহুবছর এসব কামারশালায় কর্মব্যস্ততা থাকলেও বর্তমানে তা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এক সময় কামারশালা টুংটুং শব্দে থাকত মুখরিত। সেই শব্দ এখন আর তেমন শোনা যায় না। কোরবানির ঈদের আগে কামারদের সামান্য একটু ব্যস্ততা দেখা গেলেও বছরের বেশির ভাগই অলস সময় কাটান কামার সম্প্রদায়। কর্মকাররা বলছেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় ক্রেতা সংকটের ফলে এই পেশায় সংসারের ঘানি টানতে চরম বিপাকে পড়ছেন তারা। তাদের দাবি, সরকারি সাহায্য সহযোগিতা, ব্যাংক বা এনজিও থেকে ঋণ পাওয়া গেলে তাদের এই পেশাকে টিকিয়ে রেখে সুখে-শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারবেন। স্থানীয়রা জানান, পৌর বাজার, হারুয়া বাজার, রায়ের বাজারে শতাধিক কর্মকারদের দোকান ছিল। এ সব কর্মকারদের তৈরি বিভিন্ন প্রকারের জিনিসপত্র পাইকারী ব্যবসায়ীরা নিয়ে যেতেন। সেই সময়ে তাদের ব্যবসা ছিল জমজমাট। লৌহজাত শিল্পের এসব সংকটের কারণে পেশাদার কর্মকাররা তাদের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যোগ দিচ্ছেন। আর যারা এ পেশা ছাড়া কোনো কাজ পারেন না, শুধু তারাই এ পেশায় জড়িত আছেন। ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের নির্মল কর্মকার বলেন, আমি প্রায় ৫২ বছর ধরে এ পেশায় আছি। আমাদের তৈরি জিনিসগুলো বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা নিয়ে যেতেন; কিন্তু এখন পাইকারি তো দূরের কথা খুচরাও বিক্রি করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। নিতাই কর্মকার বলেন, এ পেশায় কর্মরত থেকে সংসার, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হয়। তিনি আরো বলেন, লেখাপড়া করিনি এবং অন্য কাজও পারি না, তাই এ কাজ করি। বর্তমানে আমাদের তৈরি দা, বঁটি, খুন্তি, কোদাল, কাস্তে, বেলচা, কুড়াল, কাটারি, নিরানি, কাঁচি ইত্যাদি তৈরি করে করে দৈনিক ৬০০ টাকা পাই। এ টাকা দিয়ে পরিবার নিয়ে কোনোরকমে দিন পার করছি। হারুয়া বাজারের সংকর কর্মকার বলেন, বর্তমানে এ কাজের তেমন চাহিদা নেই। কোরবানির ও রমজানে ঈদের আগে কিছু কাজ হয় এবং ধান কাটার সময় কিছু কাজ হয়। তাছাড়া কাজ হয় না। সারা বছর অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। বাপ-দাদার আমল থেকে এ পেশায় জড়িত। অনেক কষ্ট করে জীবনযাপন করছি। বর্তমানে আমাদের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা খুব কম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত