রঙিন ফুলকপি ভ্যালেন্টিনা আর ক্যারোটিনা চাষ

তিনগুণ লাভে খুশি কৃষক

প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. মোস্তাইনুল হক, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ)

বাহারি নাম ভ্যালেন্টিনা আর ক্যারোটিনা কোনো ফুলের নাম নয়, রঙিন ফুলকপির নাম। একই মাঠে পাশাপাশি দুটি খেতের সবুজ পাতার ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে রঙিন ফুলকপি। কোনোটি বড়, কোনোটি ছোট। খেত দুটির ফুলকপিগুলোর একটির রং বেগুনি, অপরটির হলুদ। বেগুনি রঙের ফুলকপির নাম ভ্যালেন্টিনা আর হলুদ রঙের ফুলকপির নাম ক্যারোটিনা। গতানুগতিক সাদা রঙের ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপির বাজারমূল্য অনেক বেশি। দুই জাতের এই রঙিন ফুলকপি প্রথমবার চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক মো. মোশারফ হোসেন। তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার জন্মেজয় গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামের খেতেই তিনি এই ফুলকপির চাষ করেছেন। উপজেলায় রঙিন ফুলকপি চাষের বিষয়টি নতুন হওয়ায় প্রতিদিনেই অনেক আসছেন বাহারি এই ফুলকপি দেখতে। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, ‘বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের’ আওতায় চলতি বছর রঙিন ফুলকপি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই প্রকল্প থেকে উপজেলায় একমাত্র চাষি হোসেনকে ১৫ শতাংশ জমিতে রঙিন কপির প্রদর্শনী দেয়া হয়। প্রথমবারেই সফল হয়েছেন কৃষক মোশারফ। তার খেতে রঙিন ফুলকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। গত সোমবার বিকেলে মোশারফের কপি খেতে গিয়ে দেখা গেছে, কিছুটা লম্বা সবুজ পাতার আড়ালে ফুটে আছে রঙিন ফুলকপি। খেতটিতে ফুটে আছে বেগুনি রঙের ফুলকপি এবং হলুদ রঙের ফুলকপি। খেতে দাঁড়িয়ে কৃষক মোশারফ হোসেনের বাবা শহীদ মিয়া জানান, কৃষি অফিস থেকে প্রদর্শনী দিয়ে রঙিন কপি চাষ করায়। এখন কপির বেশ ভালো ফলন হয়েছে। সাধারণ কপির চেয়ে দাম পাচ্ছেন দ্বিগুনের বেশি। অল্প জমিতে এই ফুলকপি চাষ করে বেশি লাভ পাওয়া যায়। উপসহকারী কৃষি অফিসার রুহুল আমিন ও হুমায়ুন কবীর বলেন, এবার ফুলকপি চাষ হওয়ার পর অনেক কৃষক চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। রঙিন জাত দেখতে সুন্দর ফলনও ভালো। কৃষক দামও ভালো পাচ্ছেন। এ দুটি জাতের সবচেয়ে বড়গুন হচ্ছে এটাতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। গফরগাঁও উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রকিব আল রানা বলেন, উপজেলায় এবার প্রথমবার ৩৩ শতাংশ জমিতে হলুদ, বেগুনি এবং সবুজ এই তিন রঙের ফুলকপি চাষ হয়েছে। প্রচলিত সাদ ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকুপির চাহিদা অনেক বেশি এবং এর পুষ্টিগুনও অনেক বেশি। এ বছর কৃষক প্রচলিত ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপি প্রায় তিনগুন বেশি দামে বিক্রি করতে পারছে। এর কারন হিসেবে তিনি জানান, এ ফুলকপিগুলোতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অনেক বেশি থাকে। এছাড়াও পরিমানে ক্যারোটিনা, অ্যান্তোসাইরিন নামে এক ধরনের ভিটামিন থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক দরকারি। তাছাড়াও রঙিন কপিতে ভিটামিট এ থেকে শুরু করে বি-১, বি-২ এ ধরনের ভিটামিনগুলো রয়েছে। জনগণ ও কৃষকের মাঝে ব্যাপক চাহিদা থাকায় আমরা এর সম্প্রসারণে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।