গো-খাদ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি

কচুরিপানায় ভরসা

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

মেহেরপুরে খাদ্যাভাবে জলজ আবর্জনা খ্যাত কচুরিপানা খাচ্ছে গবাদিপশুরা। পশু খাদ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে মালিকরা এখন এর মাধ্যমেই মেটাচ্ছেন পশুর খাবারের চাহিদা। ঘাসের স্বল্পতা ও পশু খাদ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির কারণে এখানকার মধ্যম ও স্বল্প আয়ের পশুপালনকারীরা বাধ্য হচ্ছেন জলজ আবর্জনা তুলে এনে গরুকে খাওয়াতে। আঠার শতকের শেষ দিকে এক ব্রাজিলিয়ান পর্যটকের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা কচুরিপানা এখন আমাদের দেশের প্রায় সব জায়গায় গবাদি পশুর আপদকালীন খাবার। স্বল্প মাত্রায় পুষ্টি উপাদান এবং অধিক ক্ষতিকর উপাদান থাকার পরেও আপদকালে বা খাদ্য সংকটে মেহরপুরের অনেক পশুপালনকারী গরু ছাগলকে কচুরিপানা খাওয়াচ্ছেন। বিশেষত গরু-মহিষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে বিকল্প হিসেবে পানিতে ভাসমান কচুরিপানার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন তারা। অর্থ সাশ্রয়ের জন্যও অনেকেই অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি এখন গবাদি পশুকে খাওয়াচ্ছেন কচুরিপানা। গো-খাদ্যের বিকল্প হিসেবে কচুরিপানা, বিভিন্ন গাছের পাতাসহ নানা অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গবাদি পশুকে খাওয়ানোতে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে পশুরা। মেহেরপুর সদর উপজেলার পন্ডের ঘাট এলাকার এক পালনকারী ভাদু খাঁ বলেন, এখন পশু খাদ্যের যে দাম, তাতে গরু বিক্রি করেও খাবারের জোগান দিতে পারছি না। ঘাসের বিকল্প হিসেবে এজন্যই নদী থেকে কচুরিপানা তুলে এনে গরু ও ছাগলকে খাওয়াচ্ছি। বাড়িতে পশু পালনকারী গৃহবধূ ময়না বলেন, বাজারে ঘাস, ভুসি ও অন্যান্য দানাদার জাতীয় খাবার ও রেডি ফিডের অতিরিক্ত দামের কারণেই আমরা এখন গরু ছাগল ও হাঁসকে কচুরিপানা খাওয়াচ্ছি। কচুরিপানার পুষ্টিগুণ ও পশু খাদ্য হিসেবে উপযোগিতা নিয়ে মেহেরপুরে সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাকিবুল ইসলাম বলেন, গরুকে কচুরিপানা খাওয়ালে মাংসের উৎপাদন ও দুধের ফ্যাট কমে যায়। মাত্রাতিরিক্ত কচুরিপানা পশুকে খাওয়ালে পাতলা পায়খানা বা বদ হজম হয়। এমনকি অতিরিক্ত কচুরিপানা খেলে পশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তবে খাদ্যাভাবে নিতান্তই যদি প্রয়োজন হয় তবে জলাশয় থেকে কচুরিপানা তুলে এনে, রোদে শুকিয়ে, একদিন পর বিচালির সঙ্গে অল্প পরিমাণে খাওয়ানো যেতে পারে।