ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নওগাঁয় দুধের দাম বাড়লেও হাসি নেই খামারির

নওগাঁয় দুধের দাম বাড়লেও হাসি নেই খামারির

রমজানকে সামনে রেখে নওগাঁর মহাদেবপুরে দুধের দাম প্রতিলিটারে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। তবে দাম বাড়লেও সন্তুষ্ট নয় খামারিরা। কারণ, দানাদার খাবারের দাম বেশি হওয়ায় তেমন লাভবান হতে পারছেন না খামারিরা। বর্তমানে যেখানে কেজি ও মিলি লিটারে পণ্য বেচাকেনা হচ্ছে। সেখানে মান্ধাতার সময় থেকে বাংলা পরিমাপ (সের) হিসেবে দুধ বিক্রি হয়ে আসছে। এতে ক্রেতারা সঠিক পরিমাপে দুধ কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সঠিক পরিমাপে দুধ বেচাকেনার দাবি জানিয়েছেন ভোক্তারা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় গাভীর খামার রয়েছে ৪৯টি। বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রা দশমিক ২৭ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হয় দশমিক ৩১ লাখ মেট্রিক টন। মহাদেবপুর উপজেলা সদরে প্রতিদিন দুবার করে দুধের বাজার বসে। সকাল ৭টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত বক চত্বর মোড়ে এবং বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সামনে। সকালে দুধের সরবরাহ বেশি থাকায় বর্তমান বাজারে প্রতি সের দুধ ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। এই বাজারে সকালে ৪০ থেকে ৫০ মণ দুধের সরবরাহ হয়। ২০ থেকে ২৫ জন ব্যবসায়ী দুধ কিনে থাকেন। পাশাপাশি অনেকে বাসাবাড়িতে খাবার জন্য কিনে থাকেন। সকালে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকার দুধ বেচাকেনা হয়ে থাকে। বিকালে দুধের সরবরাহ কম হওয়ায় প্রতিসের দুধ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। এতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার দুধ বেচাকেনা হয়। তবে সামরে রমজান মাস সে সময় প্রায় ৮০ থেকে ৯০ টাকা সের পর্যন্ত বিক্রি হবে। এসব দুধ ব্যবসায়ীর (গোয়াল) হাত ধরে চলে যাবে বিভিন্ন মিষ্টান্নের দোকানে।

দুধ থেকে ছানা উৎপাদনের পর তা থেকে বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি, দই ও সন্দেশ তৈরি হবে। ক্রেতা-ভোক্তারা জানান, দুধ একমাত্র পণ্য যা এখন পর্যন্ত বাংলা ওজন (সের) হিসেবে বিক্রি হয়। এতে করে ওজনে কম হয়। তবে দুধের ওজন লিটারে চালু করা প্রয়োজন। এতে বিক্রেতা ও ভোক্তা দুজনের জন্য সু্বধিা হবে। মধুবন গ্রামের কৃষক সামছুল হক বলেন, তিনটি গাভীর মধ্যে গত ৮ মাস থেকে একটি গাভী দুধ দিচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৮ সের দুধ দেয়। তার মধ্যে সকালে ১১ সের হয়। গত কয়েক দিন থেকে ৬০ টাকা সের বিক্রি হচ্ছে। দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে গরুর খাবারে প্রতিদিন খরচ হয় প্রায় ২৫০ টাকা। দানাদার খাবারের পাশাপাশি খড় ও সবুজ ঘাস দেয়া হয়। ৮ মাস আগে দুধের দাম ছিল ৪০ টাকা। সামনে রমজান মাস চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, আমরা বাংলা ওজন সের হিসেবে দুধ বিক্রি করা হয়। যদি লিটারে বিক্রি করতে হয় পরিমাপে বেশি লাগবে। কিন্তু লিটারে বিক্রি করলে তো দাম বেশি পাওয়া যাবে না। উপজেলার উত্তরগ্রাম গ্রামের কৃষক আজিজুল হক বলেন, একটি গাভী থেকে দিনে প্রায় ১৪ সের দুধ পাওয়া যায়। এর মধ্যে সকালে ৯ সের হয়। দুধ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা সের। যেখানে দিনে গাভীর প্রতি খরচ হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বর্তমানে ভূষি ৫০ টাকা ও দানাদার খাবার ৫২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। দুধের দাম ৮০ টাকা সের হলে কিছুটা লাভবান হওয়া যাবে। শুধু রমজানের সময় দাম পেলে হবে না। সারা বছরই দাম থাকতে হবে। মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আব্দুল মালেক বলেন, বর্তমানে দুধের দাম কিছুটা বেড়েছে। খামারি বা কৃষকরা দুধ সের হিসেবে বিক্রি করে আসছে, যা মিলি লিটার থেকে প্রায় ৩০ মিলি লিটার কম। ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার খামারিদের মিলি লিটার হিসেবে বিক্রি করতে সচেতনতা মুলক প্রচার করা হয়েছে। তবে শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে আমরা মাঠে নামব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত