ছাত্রীদের চুল কাটার অভিযোগে শিক্ষিকা বরখাস্ত

প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর সৈয়দপুর আব্দুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজে হিজাব ও ওড়না না পরায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগে শিক্ষিকা রুনিয়া সরকারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদের নির্দেশে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ভুইয়াকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাব্বির আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার বেলা ৩টার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর সৈয়দপুর আব্দুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাস চলাকালে রুনিয়া আক্তার হিজাব না পরে আসায় ক্লাসের ৯ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই স্কুল অ্যান্ড কলেজর অধ্যক্ষ মিয়া ফরিদ আহম্মেদ বলেন, ‘নতুন শিক্ষা কারিকুলামে কাগজ কাটার জন্য শিক্ষার্থীরা ক্লাসে কাঁচি নিয়ে আসে। সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাস চলাকালে রুনিয়া সরকার শিক্ষার্থীরা হিজাব ও ওড়না না পরায় শিক্ষার্থীদের ভয় দেখানোর জন্য অন্তত ৯ জনের সামান্য চুল কেটে দেয়।’ তিনি বলেন, ‘এটা শিক্ষক অন্যায় করেছেন। আমি তখন বিদ্যালয়ে ছিলাম না। পরে জেনেছি। এ বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দাবি করেন, স্কুলে যেন মেয়েদের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা আর কখনও না ঘটে। তারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ বিষয়ে জানতে রুনিয়া সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলে ব্যস্ততা দেখিয়ে কল কেটে দেন। এরপর কল করলে তিনি আর রিসিভ করেননি। আব্দুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মাহমুদ বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তদন্ত কমিটি হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ইউএনও সাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘আমি ওই বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে গতকাল স্কুল পরিদর্শনে যাই। আমার সঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে যাই। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে শিক্ষিকা রুনিয়া সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ওই শিক্ষক এক বছর আগে এনটিআরসিএ থেকে এখানে নিয়োগ পেয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন আমরা এনটিআরসিএয়ের কাছে পাঠাব। চুল কাটার ঘটনা নিয়ে আমি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলেছি। যাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কিত না হয়।’