ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঘোড়ায় চড়ে এলেন বর কনে গেলেন পালকিতে

ঘোড়ায় চড়ে এলেন বর কনে গেলেন পালকিতে

ঘোড়ায় চড়ে আসেন বর আর বেহারার কাঁধের পালকিতে চড়ে নতুন বউ যান শ্বশুর বাড়ি। গ্রাম বাংলার এমন বিয়ের দৃশ্য আধুনিকতার দাপটে প্রায় হারিয়ে গেছে। তবে নাটোর সদর উপজেলার হালসা এলাকায় এমন এক বিয়ের আয়োজন হয়েছে। সাদা শেরওয়ানি পড়ে ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে আসেন বর। আর বিয়ের সব রীতি ও আয়োজন শেষে নববধূকে সুসজ্জিত পালকিকে করে নেওয়া হয় শ্বশুর বাড়িতে। গত বুধবার দুপুরে নাটোর সদর উপজেলার হালসা এলাকার ফরহাদ আলীর ছেলে মো. সালমান সাফি সৌরভের সঙ্গে একই এলাকার দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে মারিয়া খাতুনের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। ব্যান্ড পার্টি নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে বরসহ শতাধিক বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে আসেন। বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া আর পালকিতে বিয়ে দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন শত শত মানুষ। এ সময় বর ও নববূধকে দেখতে রাস্তার দু’পাশে ভিড় জমায় সব বয়সি মানুষ। বর সালমান সাফি সৌরভ রাজশাহী সিটি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং কনে মারিয়া খাতুন নাটোর নবাব সিরাজ উদ্ দৌলা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বর ও নববূধর পরিবার জানান, দুই পরিবারের অনেক দিনের ইচ্ছা তাদের ছেলেমেয়ের বিয়ে যেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঘোড়া ও পালকিতে চড়ে হয়। সেজন্য দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এমন আয়োজন করেছেন পরিবার। ব্যান্ড পার্টি শিল্পী হারুন বলেন, এক সময় ব্যান্ড পার্টি আর ঘোড়ার গাড়িতে বিয়ে হতো। বর ও কনের পরিবার উৎসব করেছে। এখন তেমন আর ঘোড়া ও পালকি বিয়ে হয় না। মাঝেমধ্যে অনেক পরিবার শখের কারণে এমন বিয়ের আয়োজন করেন। কনে মারিয়া খাতুন বলেন, আগে ঘোড়া ও পালকিতে অনেক বিয়ে হতো। এখন তা আর দেখা যায় না, সেজন্য পরিবার ও আমাদের ইচ্ছায় পরানো রীতি অনুসারে এভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। মারিয়া বলেন, এমন আয়োজনে আমি অনেক খুশি। বাবার ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। তাছাড়া গ্রামীণ ঐতিহ্য পালকিতে বিয়ের এই আনুষ্ঠানিকতা আমার জীবনের সেরা স্মৃতি হয়ে থাকবে। বর সালমান সাফি সৌরভ বলেন, রাজ-রাজত্বের শহর হচ্ছে নাটোর। সেই ঐতিহ্যকে ধরতে রাখতে এমন আয়োজনে বিয়ের করেছে আমাদের পরিবার। গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য ছিল ঘোড়া, পালকি বা হাতিতে বিয়ে। নাটোরে হাতি না পাওয়ায় ঘোড়া ও পালকির ব্যবস্থা করে বিয়ে করতে এসেছি। কনের বাবা দোলোয়ার হোসেন বলেন, অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল মেয়ের বিয়েতে ঘোড়া ও পালকি থাকবে। সেই ইচ্ছা পূরণে বর ঘোড়ায় চড়ে এসে কনেকে পালকিতে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে গেছে। সবাই তাদের নতুন জীবনের জন্য দোয়া করবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত