বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম হত্যা

বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমাস আলী, ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার ঈশ্বরদীর আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা- জনতার আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম মোস্তফা চান্না মণ্ডলের সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে বাজার সড়কে এই প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন হয়েছে। প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পাবনা-৪ এর সাবেক সংসদ সদস্য ও মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক প্রধান মো. নুরুজ্জামান বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ত ম শহীদুজ্জামান নাসিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল্লাহ, পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাব্বুল ইসলাম হাব্বুল, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবু মণ্ডল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম মিন্টু, পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম বিশ্বাস, জাসদ নেতা জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার, রবিউল ইসলাম রবি, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রহমান মিলন, মাসুদ রানা, রেজাউল করিম রাজা, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, নিহত মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম এলাকায় প্রতিবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে খুনিদের শনাক্ত করে বিচার দাবি, বিশেষ করে বর্তমান স্বাধীনতার মাসেই খুনিদের বিচার করে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যার পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়েছে। এখনও এই খুনের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি। বর্তমানে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত করছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) পাবনা। ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম পাকশী থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। রাতে নিজ বাড়ির গেটের সামনে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তার ওপর কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিৎকার দিলে বাড়ি থেকে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার পেটে ও পিঠে গুলির দুটি ক্ষতচিহ্ন দেখতে পান। এ সময় তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা যান। পরদিন নিহতের ছেলে তানভির রহমান তন্ময় বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর সন্দেহভাজন হিসেবে পাকশী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাসের ছেলে রকি বিশ্বাস এবং ভাতিজি আরজু বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া রাজীব ও লিখন নামের আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা আদালত থেকে জামিন পান। ওই হত্যাকাণ্ডের পর ঈশ্বরদীর মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ওই সময় তারা ঈশ্বরদী, পাকশী, দাশুড়িয়া ও পাবনায় অনেক গুলো মানববন্ধন ও পথসভা করেন। এক দিন আধাবেলা হরতাল কর্মসূচি পালন করা হয়। হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত এবং খুনিদের দ্রুত বিচারের দাবিতে ২০১৯ সালের ৮ মে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।