নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করেই স্কুলের গাছ কর্তন

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়মণ্ডনীতির তোয়াক্কা না করে অনুমোদন ছাড়াই একটি স্কুলের কাঁঠালগাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে মোলানী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের ঠাকুরগাঁও-বালিয়াডাঙ্গী মহাসড়কের মোলানী বাজারে কাঁঠাল গাছটি কেটে ফেলার নির্দেশ দেন ওই স্কুল কমিটির কয়েকজন সদস্য। এমন অভিযোগ করেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আখতার হোসেন। গাছটি কাটার সময় তার অনুমতি নেওয়া হয়নি এমন অভিযোগও করেন তিনি। জানা যায়, মোলানী উচ্চ বিদ্যালয়ের অধিনে ২.৬৬ একর জমির মধ্যে কয়েক শতক জমিতে কাঁচাবাজারসহ কয়েকটি দোকান ভাড়ায় রয়েছে। তার মধ্যে এই কাঁঠালগাছটি স্থানীয় মকিম উদ্দীন নামে এক হোটেল ব্যবসায়ীর দোকানের সামনে ছিল। তার দোকানের সামনে কাঁঠালগাছটি অনেক অসুবিধা করছে মর্মে তিনি প্রধান শিক্ষকসহ সভাপতিকে জানান। পরে এ বিষয়টি নিয়ে স্কুল কমিটি সভার মাধ্যমে মকিম উদ্দীনকে গাছটি কাটার অনুমতি দেন তবে কাটার আগে আইনগত নিয়মণ্ডনীতি অনুযায়ী গাছটি কাটার কথা বলেন প্রধান শিক্ষক আখতার হোসেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, কাঁঠালগাছটি অনেক পুরাতন ছিল। ২১ শে ফেব্রুয়ারি সকালে কাঁঠালগাছটি ওই স্কুলের সভাপতির নির্দেশে কাটা হচ্ছে আমরা দেখেছি। গাছটি বিক্রির জন্য কোনো প্রকার ডাক দেওয়া হয়নি। সভাপতিসহ স্কুল কমিটির সদস্যরা তাদের ইচ্ছামতো কাজ করেছে। এ নিয়ে এলাকায় বেশ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আখতার হোসেন বলেন, গাছটি কাটার বিষয়ে আমরা সভা করেছি। তবে আমি বলেছিলাম আইনি প্রক্রিয়া শেষে গাছটি কাটা হোক। গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি ফজলুর কাদের সরকার নামে একজন সহকারী শিক্ষক মুঠোফোনে গাছটি কাটার অনুমতি চাইলে নীতিমালার বাইরে আমি কোনো কাজ করতে পারব না এই কথা জানিয়ে দেই। পরবর্তীতে ২২ শে ফেব্রুয়ারিতে আমি এসে দেখি স্কুল কমিটির সদস্য আনছারুল, আব্দুল বাসেদসহ কয়েকজন গাছটি কেটে ফেলেছে।

আমি এ বিষয়ে সভাপতিকে অবগত করলে তিনি এ বিষয়টা নিয়ে আমার কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানান। অন্যদিকে সভাপতি ইসাহাক আলী মুঠোফোনে জানান, গাছটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় আমরা রেজুলেশনের মাধ্যমে গাছটি কর্তন করে বিক্রি করেছি। বিক্রি করার পরে স্কুলের একাউন্টে টাকা জমা করা হয়েছে। গাছটি কাটার জন্য বন বিভাগের অনুমোদন লাগবে এটা আমার জানা নেই। আইনি প্রক্রিয়া করার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জানে ওইটা আমি কী জানি বলে অনুমোদনের বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই তবে স্কুলের গাছটি কাটতে হলে তাদের প্রথমে বন বিভাগে আবেদন দিয়ে ইউএনও মহোদয়ের কাছে রেজুলেশন করে অনুমোদনের মাধ্যমে কাটতে পারে। অনুমোদনের বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন মুঠোফোনে জানান, ওই স্কুলের গাছ কাটার বিষয়ে আমাকে কোনো প্রকার জানানো হয়নি। অনুমোদন ছাড়াই গাছটি কেন কাটা হলো তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।