ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

৮ বছরেই আটকে আছেন ৩২ বছরের ছমির

৮ বছরেই আটকে আছেন ৩২ বছরের ছমির

দেখতে শিশুর মতোই রয়ে গেছেন কুড়িগ্রামের ৩২ বছর বয়সি আছর উদ্দিন ছমির। এই বয়সে এসেও তার উচ্চতা মাত্র ৪০ ইঞ্চি। শুধু তাই নয়, গ্রামের অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে সারা দিন খেলাধুলা করছেন তিনি। বর্তমানে তার দরিদ্র বাবা-মা দেখাশোনা করলেও আছর উদ্দিনের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা। সরেজমিন দেখা গেছে, বাড়ির বাইরে খেলাধুলায় মত্ত থাকা শিশুদের দেখে বোঝার উপায় নেই সেখানে রয়েছেন ৩২ বছর বয়সি আছর উদ্দিন ওরফে ছমির। এক মনেই খেলাধুলা করছেন শিশুদের সঙ্গে। আবার কখনও বাবার হাত ধরে যাচ্ছেন বাজারে। কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের চেয়ারম্যান পাড়ার আজিম উদ্দিন ও আছিয়া বেগম দম্পতির ছেলে আছর উদ্দিন ছমির। ১৯৯২ সালের ২৪ মে জন্ম তার। বয়স ৩২ বছর হলেও ৮ বছরের শিশুর মতোই তার দৈহিক আকৃতি ও মানসিক অবস্থা। এই দরিদ্র দম্পতির এক মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে আছর উদ্দিন দ্বিতীয় এবং ছেলের মধ্যে বড়। আছর উদ্দিনের বাবা-মা জানান, জন্মের পর থেকেই সে অস্বাভাবিক। বয়স হলেও তাকে শিশুর মতোই লালন-পালন করছেন তারা। ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে দেখিয়েছেন চিকিৎসকও। তারপরও শরীরে নানা সমস্যা নিয়ে শিশুই থেকে গেছেন আছর উদ্দিন। নিজেদের অবর্তমানে এই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত তারা। আর স্থানীয়রা বলেন, আছর উদ্দিনের সম বয়সিরা বিয়ে করে ঘরসংসার করলেও সে রয়ে গেছে মায়ের কোলে। ছমিরের খেলার সঙ্গী ৮ বছর বয়সি শিশু সিনথিয়া আক্তার বলে, ছমির আমার চাচা হয়। আমরা একসঙ্গে সমসময় খেলি। ছমির চাচা কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে না, সে খুব ভালো মানুষ। তার মা আছিয়া বেগম বলেন, যখন আমার ছেলের ২ বছর বয়স হয় তখন জানতে পারছি আমার ছেলের শারীরিক সমস্যা আছে। পরে তাকে স্বাভাবিক করে তুলতে অনেক ডাক্তার কবিরাজকে দেখাইছি। ডাক্তার আমাকে বলছে আপনার ছেলে স্বাভাবিক হবে না। তারপরেও তাকে মাঝে মাঝে ডাক্তারকে দেখাইছি। এখন তো তার বয়স অনেক হয়েছে। কিন্তু স্বাভাবিক হয়নি। এখন তার ঘাড়ে সমস্যা, পেটের সমস্যা, আরও অনেক শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিবেশী আকবর আলী বলেন, ছমিরকে ছোট বেলা থেকেই প্রতিবন্ধীর মতো দেখছি। সব সময় ছোট বাচ্চাদের সঙ্গেই খেলাধুলা করে। তার আসলে শারীরিক বৃদ্ধি নেই। ১৯৯২ সালে তার জন্ম। এখন তার বয়স ৩২ বছর হলেও ছোটদের সাথেই মিশে সবসময়। ছমিরের সঙ্গে ছেলেরা বিয়ে করে ১-২টি করে সন্তানের বাবা হয়েছে। আর ছমির এখনো শিশুর মতোই রয়ে গেছে। এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম বলেন, মায়ের গর্ভাবস্থায় ত্রুটিজনিত কারণে এমন খর্বাকৃতির সন্তানের জন্ম হয়। এজন্য সন্তান গর্ভে থাকার সময় নিয়মিত চেকআপ আয়োডিন ও পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পরামর্শ এই চিকিৎসকের। উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে আছর উদ্দিনকে কিছুটা হলেও সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত