শিমুলের সৌন্দর্যে প্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে

প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

টুকটুকে শিমুলে যেন লালশাড়ি পড়েছে দিনাজপুরের-বীরগঞ্জ মহাসড়ক। কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে সেখানে চোখে পড়ে না রক্ত লাল শিমুল গাছ। সেই মূল্যবান শিমুল গাছ এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। এই উপজেলায় বসন্তের শুরু থেকেই রক্তিম রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে শিমুল গাছের ফুল। শুধু ফুল আর ফুল-পাতা নেই, ফুটন্ত এ ফুল যেন সকলের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে। আর এই রক্ত লাল থেকে সাদা ধূসর হয়ে তৈরি হয় তুলা। কিন্তু এখন বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তুলা তৈরি ও ফোম ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমূল তুলা ব্যবহার অনেকটাই কমে গেছে।

তবে এখনও দিনাজপুর-বীরগঞ্জ মহাসড়কের ২৮ কিলোমিটার রাস্তার দুইধারে শোভা বাড়িয়ে আছে লাল টুকটুকে শিমুলের বন। এই মহাসড়কের বিভিন্ন গাছের ফাঁকে ফাঁকে শতাধিক শিমুল গাছ রয়েছে। শুধু ফুল আর ফুল, পাতা নেই, ফুটন্ত এ ফুল দৃষ্টি কাড়ে নেয় সবার। পাখিরা উড়ে এসে বসছে লাল শিমুলের ডগায়। ঝড়ে পড়া শিমুলের লাল গালিচার রূপ দেখা যায় শিমুলতলায়। মোহনীয় রূপে প্রকৃতিকে রাঙিয়েছে শিমুল। যা পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের দৃষ্টি কাড়ছে। ফাগুনের শেষে বসন্তের আবহে গাছে গাছে পরিপক্ব শিমুল ফুল। কাকডাকা ভোরে রাস্তায় ঝরে পড়া ফুলগুলো দেখে মনে অন্যরকম অনুভূতি জাগে। মনে হয় যেন রক্তিম পথ। শিমুল ফুল না ফুটলে যেন বসন্ত আসে না। বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিবেশের সঙ্গে সংস্কৃতি চর্চারও একটি যোগ সূত্র রয়েছে।

গাছে গাছে ফুটন্ত এই শিমুলের লাল রঙ যেন চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এরপর এই রক্ত লাল থেকে সাদা ধূসর হয়ে তৈরি হয় তুলা। শিমুলের তুলার রয়েছে আলাদা কদর। কিন্তু এখন বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তুলা তৈরি ও ফোম ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে। প্রায় দুই দশক আগে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় গাছে গাছে শোভা বর্ধন করতো এই শিমুল ফুল। তবে কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে সেখানে চোখে পড়ে না রক্তলাল শিমূল গাছ। মূল্যবান শিমুল গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তর পথে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় দেখা মিলল ফুটন্ত ফুলের রক্ত লাল শিমুল গাছ। শিমুল গাছের ফুটন্ত রক্ত লাল শিমুল যেন চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে রঙ। বীরগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বনমালী রায় বলেন, বলাকার মোড়ের কালী মন্দিরের পেছনে একটি ঐতিহাসিক শিমুল গাছ ছিল, সেটি অযত্নে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। গ্রামের মানুষ এক সময় আখের গুড় তৈরিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠকাঠন্য নিরাময়ে শিমুল গাছের মূলকে ব্যবহার করত। গোলাপগঞ্জ হাট এলাকার দরপো চন্দ্র রায় বলেন, গ্রাম বাংলার মানুষদের এই শিমুল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। মানুষরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করত। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাত লেপ, তোশক, বালিশ। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছ।