ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভাঙনে সরে আসছে সীমান্ত নদী ইছামতী

পাল্টে যাচ্ছে দেবহাটার মানচিত্র
ভাঙনে সরে আসছে সীমান্ত নদী ইছামতী

আন্তর্জাতিক সীমান্ত নদী ইছামতীর ভাঙনের কারণে বাংলাদেশের দিকে সরে আসছে। পাল্টে যাচ্ছে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার মানচিত্র। এরইমধ্যে নদীভাঙনে ইছামতীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা ঘরবাড়ি, কবরস্থা বিলীন হয়ে গেছে। অন্যদিকে ভারতীয় অংশে জেগে ওঠা চরে গড়ে উঠেছে, হোটেল-পার্ক ইটের ভাটাসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নদীর বাংলাদেশ অংশ থেকে বালু উত্তোলন করায় ভাঙন দ্রুত বাড়ছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, নদী তীর সংরক্ষণ নামে একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। নদী পাড়ের জহির উদ্দিন, আবু তালেব, গোলাম রাব্বিসহ স্থানীয়রা জানায়, ইছামতি বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। সাতক্ষীরা সীমান্তের হাড়দ্দহা থেকে কালীগঞ্জের বসন্তপুর এবং ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার পানিতর এলাকা থেকে হিঙ্গলগঞ্জ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতকে বিভক্ত করেছে ইছামতী নদী। প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকায় ৮ থেকে ১০ জায়গায় ভাঙন অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশ অংশের কয়েক হাজার বিঘা জমিবিলীন হয়ে গেছে। সরেজমিন দেখা গেছে, দেবহাটা উপজেলার খানজিয়া, রাজনগর, ভাতশালা ও কোমরপুর গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকাবিলীন হয়ে গেছে। বিপরীতে নদীর ভারতীয় অংশে জেগে উঠছে বড়বড় চর। ভাঙন রোধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জেগে উঠা চরে গড়ে উঠেছে হোটেল-পার্ক ইটের ভাটাসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভারতীয় অংশে নদীর পাড় ঢালাই দেওয়ায় ভাঙনে বাংলাদেশের দিকে সরে আসছে সীমান্ত নদী ইছামতি। পাল্টে যাচ্ছে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার মানচিত্র। দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান জানান, নদীভাঙনে দেবহাটার শিবনগর মৌজার পাশে রাজনগর মৌজা এখন আর নেই। এভাবে চলতে থাকলে ১০ বছরের মধ্যে দেবহাটা উপজেলার বড় অংশ হারিয়ে যাবে। দেবহাটা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ মো. আসাদুজ্জামান জানান, দেবহাটার বালু উত্তেলন করা বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি এলাকায় ভাঙন রয়েছে। ভাঙন রোধে গাছ লাগানোসহ টেকসই বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ভারতীয় অংশের জমি উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-১) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন জানান, সীমান্ত নদী তীর সংরক্ষণে একটি প্রকল্প প্রস্তব করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার খারহাট থেকে বসন্তপুর ও দেবহাটা উপজেলার টাউন শ্রীপুর থেকে ভাতশালা পর্যন্ত ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার এলাকায় ইছামতী নদীতে ভাঙন চলছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্ত রক্ষার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। এছাড়া ইছামতী নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেল জরিমানা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত