কেশবপুরে কাউন্সিলরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরে চাঁদাবাজির ঘটনায় পৌর কাউন্সিলর কবির হোসেনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জাহিদ হাসান টুটুল ও সোহান হোসেন নামে দুই আসামিকে আটক করেছে থানা পুলিশ। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে কেশবপুর উপজেলার কায়েমখোলা গ্রামের আতোষ গাজীর ছেলে ভাংড়ি ব্যবসায়ী মো: বাচ্চু রহমানকে মোবাইলের মাধ্যমে একটি মেয়ে ফোন করে কেশবপুর আলিয়া মাদ্রাসার পাশে আসার জন্য অনুরোধ করে। অজ্ঞাত ওই মেয়ের বয়স ২২ বছর হবে। এরআগে ওই মেয়েটি বাচ্চুর সঙ্গে কয়েকদিন কথা বলেছে বলে জানা যায়। এরপর তাকে কেশবপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবদিয়া এলাকার হাজী ইসমাইল সড়কের মো: জিল্লুর রহমানের বসতবাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি রুমে নিয়ে আটক করে রেখে তার কাছে থাকা একটি মোবাইল, ১৪ আনা ওজনের একটি সোনার চেইন নিয়ে তার কাছে আরো ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে পৌরসভার কাউন্সিলর কবির হোসেন, আলতাপোল এলাকার মৃত মোশারফ বিশ্বাসের ছেলে জাহিদ হোসেন, আলতাফ হোসেনের ছেলে মো: সোহান, বায়সা গ্রামের জাহিদ হোসেনের ছেলে মো: সামি, মাহবুর রহমানের ছেলে ইমরান, আবদুল হাকিমের ছেলে শাহিনুর রহমান, কলারোয়া উপজেলার বাটরা গ্রামের মিলন হোসেনসহ আরো অজ্ঞাত ২-৩ জন। এ সময় চাঁদার টাকা দিতে অপারকতা প্রকাশ করলে আসামিরা বাচ্চুকে বেদম মারপিট করে। এক পর্যায়ে মো: বাচ্চু জানান, তাকে নিয়ে মণিরামপুরে তার মহাজনের কাছে গেলে দাবিকৃত চাঁদার টাকা নিয়ে দেওয়া হবে। এ সময় কাউন্সিলর কবির হোসেন একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে ওই গাড়িতে ভাংড়ি ব্যবসায়ী বাচ্চু, জাহিদ ও সোহানকে টাকা আনার জন্য পাঠান। বাচ্চুর মহাজনের কাছে ৫ লাখ টাকা চাইলে তার মহাজন বাচ্চুকে জানায়, তার কাছে ১ লাখ টাকা আছে তা দিতে পারবেন। এ সময় তার কাছ থেকে আল আরাফা ব্যাংকের ১ লাখ টাকার একটি চেক নিয়ে তারা মণিরামপুর শাখা (ব্যাংক) থেকে ওই টাকা উত্তোলন করার পর চাঁদাবাজদের কথামত, ০১৯০৪-৬৮৪২৭৯ মোবাইল নম্বর থেকে ০১৯৪৩-৭৯৩৯৯০ নম্বরে ২৫ হাজার টাকা, ০১৭৬৫-৪৪৪২৩২ নম্বর থেকে ০১৭৩৯-১৩৩৩৫১ নম্বরে ২৫ হাজার টাকা এবং নগত ৫০ হাজার টাকাসহ ১ লাখ টাকা নিয়ে নেয়। এরপর বাচ্চুকে নিয়ে আবার তারা ঘটনাস্থলে ফিরে আসে। পরবর্তীতে কাউন্সিলর কবিরসহ আসামিরা এই ঘটনা কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। ভাংড়ি ব্যবসায়ী বাচ্চু ৭ মার্চ রাতে এ ঘটনায় কেশবপুর থানায় ৭ জনসহ অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ করেন।

থানা পুলিশ তদন্ত শেষে ঘটনার প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে ওই মামলা রেকর্ড করে। এরপর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহার নামীয় আসামি জাহিদ হাসান টুটুল ও সোহান হোসেন নামে দুই আসামিকে আটক করেছে। থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জহিরুল আলম বলেন, ভাংড়ি ব্যবসায়ী বাচ্চুর কাছ থেকে চাঁদাবাজির ঘটনায় পৌরসভার কাউন্সিলর কবির হোসেনসহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনকে আটক করে যশোর আদালতে পাঠানো হয়েছে। কাউন্সিলর কবির হোসেনসহ পলাতক আসামিদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।