ভেড়ামারায় বরজে অগ্নিকাণ্ড

শতাধিক পান চাষির স্বপ্ন পুড়ে ছাই

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এ.এইচ.এম. আরিফ, কুষ্টিয়া

নিমিশেই পানের বরজকে ঘিরে স্বপ্ন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই। আগামী দিনগুলো কীভাবে চলবে, একথা চিন্তা করেই কাঁদছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা পাথরঘাট এলাকা শুরু হওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক কৃষকের প্রায় তিন হাজার বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রতি বিঘায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকা। এতে শতকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর পানের বরজে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিরা। তারা এই পানের বরজকে ঘিরে স্বপ্ন বুনেছিলেন। সব হারিয়ে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগুনে রায়টা থেকে শুরু করে গোসাইডাঙ্গা পর্যন্ত পদ্মা তীর ঘেঁষা প্রায় ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার এলাকার চারটি গ্রামের শত শত চাষির পান পুড়ে গেছে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গতকাল সকালে সরেজমিন ভেড়ামারা রায়টা ও গোসাইডাঙ্গায় গেলে সন্তানের মতো করে পানের বরজের যত্ন নেয়া মাধবপুর এলাকার নয়ন নামে এক পান চাষি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে আমাদের সব স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার দুই বিঘা জমিতে পানের বরজ ছিল। আগুনে পুড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এলাকার কৃষকদের ৯০ ভাগই পান চাষের সঙ্গে জড়িত। সবাই মহাবিপদে পড়ে গেছি। সরকারের কাছে সাহায্য চাচ্ছি। পান চাষি রবিউল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলের চাষিরা বেশিরভাগই পান চাষ করেন। চারটি গ্রামের শত শত কৃষকের প্রায় চার থেকে ৫ হাজার বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে গেছে। আনুমানিক শতকোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমি মাঠে পানের বরজে কাজ করছিলাম। এ সময় শুনলাম রায়টা মাঠে পানের বরজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মুহূর্তের মধ্যেই বাতাসের গতিতে এক বরজ থেকে আরেক বরজে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসে, তাদের সঙ্গে স্থানীয়রাও আগুন নেভানোর কাজ করে। কিন্তু অতিরিক্ত বাতাসের কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের পাশে সরকারকে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, শত শত পান চাষির কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। রায়টা থেকে শুরু করে মাধবপুর পর্যন্ত পুড়ে গেছে।