রামগঞ্জ ১ হাজার হেক্টর ধানখেত ফেটে চৌচির

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও বিএডিসির আংশিক খালে পানি না থাকায় ইছাপুর ইউনিয়নের নয়নপুর, নারায়নপুর, শ্যামদানপুরসহ কয়েকটি বিলের ১হাজার হেক্টর চাষকৃত ধানখেতের চারা পুড়ে ছাই হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে। গতকাল দুপুরে সরেজমিন এসব এলাকায় গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ চাষাবাদের জমি শুকনো। রোপণকৃত জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে আছে, কোথাও কোথাও ধানগাছ পানির অভাবে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। জমির পার্শ্ববর্তী মূল খালটিতেও পানি নেই। কৃষক এরশাদ হোসেন (অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট) এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, আমার ১৫ গন্ডা জমি চাষ করেছি। এখন পানি না পেয়ে ধানের চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপর থেকে (চাঁদপুর সেচ প্রকল্প) পানি পাচ্ছি না। ধারদেনা করে জমিতে ধান রোপণ করেছেন স্বপন ও কৃষক আবদুল হান্নান।

তারা জানান, ধান রোপণের শুরুতে পানি পেয়ে আমরা আশায় বুক বেঁধেছি। নবউদ্দোমে কাজ শুরু করি। কিন্তু ধানের চারা সবুজ হওয়ার কিছুদিন পরেই আমাদের আশার রং হলুদ হতে থাকে। খালে পানি না থাকায় জমিতে সেচ দেয়া যাচ্ছে না। চোখে অন্ধকার দেখছি এখন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় ওই এলাকার নয়নপুর হাওরে এবার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর ধানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করেছেন কৃষকরা। তার মধ্যে ১ হাজার হেক্টর ধানখেত পানির অভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শ্যামদানপুর এলাকার বিএডিসির প্রজেক্ট ম্যানেজার আবদুল মান্নান জানান, দ্রুত পানির ব্যবস্থা না করলে লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হতে পারে। কথা হয় কয়েকজন চাষির সঙ্গে- তারা জানান, চলতি মৌসুমে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে বোরো ধান আবাদ করেছেন তারা। কিন্তু চাঁদপুর সেচ প্রকল্পে পানি সংকট দেখা দেয়ায় রামগঞ্জ খালে পানি সরবরাহ বন্ধ রাখে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানির অভাবে জমিতে সেচ দিতে পারছেন না তারা। দুই একদিনের মধ্যে যদি পানি না পাওয়া যায় তাহলে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন নিয়েও তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। নয়নপুর এলাকার বিএডিসির প্রজেক্ট ম্যানেজার মো: সবুজ জানান, খালে পানি নাই। পানি আসলেও আমরা পানি তুলতে পারি না- জায়গায় জায়গায় বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার ফলে পানি এ বিল পর্যন্ত আসতে পারে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে আমরা চাষাবাদ করতে পারব। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: সবুজ হোসেন জানান, আমাদের বাঁচান-আমাদের জমি বাঁচান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পানি না পেলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার জানান, আমি বিগত সমন্বয় সভায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন অল্প কিছুদিনের মধ্যে পানির ব্যবস্থা করা হবে।