আদমদীঘিতে বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ইরি-বোরো আবাদ মৌসুমের সেচ শুরুতেই বিভিন্ন এলাকায় ইরি-বোরো স্ক্রিমের মাঠ থেকে বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির প্রবণতা বেড়েছে। ফলে চলতি ইরি-বোরো স্ক্রিমে সেচ সংকটের আশংকায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। চুরি রোধে আইন প্রয়োগকারি সংস্থার তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় কোনো ক্রমেই থামছে না বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি। জানাযায়, আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন ইরি-বোরো স্ক্রিম থেকে চলতি মৌসুমে উপজেলার নশরৎপুর, চাঁপাপুর, কুন্দগ্রাম, বিহিগ্রাম, বনতইর, বড়িয়াবার্তা, হাউসপুর, বেজার ও ছাতিয়ানগ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মাঠ থেকে প্রায় ৫০টি বৈদ্যুতিক মিটার ও দুটি ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনা ঘটেছে। মিটার ও ট্রান্সফরমার চোর চক্রের সদস্যরা মিটার চুরির সময় একটি চিরকুটে বিকাশ নম্বর দিয়ে নির্ধারিত টাকা দাবি করে মিটার ফেরৎ দিবে বলে জানায়। অনেক কৃষক হয়রানির ভয়ে বিকাশে টাকা দিয়ে মিটার ফেরৎ পেলেও চোরচক্রের পুনরায় চুরির ভয়ে নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান। আবার অনেকে চোরচক্রের দাবি করা টাকা বিকাশের মাধ্যমে দেয়ার পরও থামছে না চুরি। চোরেরা একই মিটার একাধিকবার চুরি করছে এবং প্রতিবারই গভীর নলকূপ মালিকদের নিকট থেকে একই কৌশল ব্যবহার করে টাকা আদায় করে নিচ্ছে। কৃষকদের দাবি, বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পরও পুলিশ এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পারছে না। কোনো ক্রমেই থামানো যাচ্ছে না বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি। ফলে চলতি ইরি বোরো স্ক্রিমে সেচ সংকটের আশংকায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। মঠপুকুরিয়া গ্রামের গভীর নলকূপের মালিক গোলাম রব্বানী বলেন, গত এক মাসে এই ইউনিয়নের কয়েকটি গভীর নলকূপ থেকে প্রায় ২০টি মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে মঠপুকুরিয়া গ্রামের হাজী মোহাম্মাদ আলীর মিটার চুরি হয়েছে দ্ইুবার। একই গ্রামের আব্দুস সালামের মিটার চুরি হয়েছে তিনবার। একইভাবে উপজেলার পাহালোয়নপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেন ও কামরুল ইসলামের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় বেলাল হোসেন আদমদীঘি থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেছেন। বেলাল হোসেন জানায়, থানায় ডায়েরী করার পরও পুলিশ কোন সুরাহা করতে পারেনি। গভীর নলকূপের মালিক গোলাম রব্বানী জানান, মিটার চুরির পর চোরেরা নলকূপের মালিকদের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা দাবি করে। টাকা দিতে রাজি হলে তারা একটি বিকাশ ও নগদ নম্বর দেয় এবং টাকা দেয়া হলে একটি নির্জন জায়গায় মিটার রেখে যায়। তিনি বলেন, এভাবে চুরি অব্যাহত থাকলে চলতি মৌসুমে ইরিবোরো আবাদ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ ছাড়া মৌসুমের শুরু থেকে চুরি শুরু হওয়ায় অনেকে এখন ধান রোপন করতে পারেননি। আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ রাজেশ কুমার চক্রবর্তী বৈদ্যুতিক মিটার চুরির প্রবণতা স্বীকার করে বলেন, চোর শনাক্ত করে গ্রেফতারের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দুপচাঁচিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের জানান, তার আওতাধীন এলাকায় মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরি থামছেই না। গত দুই মাসে প্রায় ৫০টি মিটার ও ট্রান্সমিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।