ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিদ্যালয় আছে নেই রাস্তা

দুর্ভোগে শিক্ষক - শিক্ষার্থীরা
বিদ্যালয় আছে নেই রাস্তা

এক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো, শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও খেলার মাঠ সবই আছে। কিন্তু নেই কোনো রাস্তা। এই বিদ্যালয়ের নাম ৬৪ নং ফরিদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। খানসামা উপজেলার ১নং আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের ফরিদাবাদ গ্রামে অবস্থিত এই বিদ্যালয়ের চারপাশে জমির খেত। জমির আইল ও মানুষের বাড়ির উঠান দিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে এই ভোগান্তি আরো চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকারিকরণ হয় ২০১৩ সালে। এখানে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ৯৬ জন। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক রয়েছেন ছয়জন। এই বিদ্যালয়ের রাস্তার জন্য ওই এলাকার হরিপদ অধিকারী, সোলেমান আলী ও রবি সেনের দেওয়া জমি দিয়ে ১৯৯০ সালের দিকে চলাচলের রাস্তা তৈরি হয়। জানা যায়, ২০১৭ সালের দিকে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হরিপদ অধিকারী দীর্ঘ ১৫ বছর পর সভাপতি হিসেবে বাদ যাওয়ার পর এবং জমির সীমানা জটিলতার জেরে স্কুল যাওয়ার জন্য নির্ধারিত রাস্তা কেটে আবাদি জমিতে রূপান্তর করেন। ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আইল দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু এসব বিষয় অস্বীকার করে হরিপদ অধিকারী বলেন, এটি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি তাই আমি ছেড়ে দিব না। বিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা নুর ইসলাম, শামসুল আলম ও মোহেন সেন বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে চলাচলের জন্য রাস্তা থাকলেও পরে কেন জানি, সেটা কেটে ফেলা হয়েছে। এইজন্য স্কুলে যেতে বাচ্চাদের কষ্ট হয়। তাই এই স্কুলের জন্য সরকারিভাবেই উদ্যোগ নিয়ে রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান তারা। বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসায় কষ্ট ও দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষক আনছার আলী বলেন, রাস্তা না থাকায় সবারই বিদ্যালয় আসতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এতে অভিভাবকরা স্কুলে শিক্ষার্থী পাঠাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে, তবুও আমরা শিক্ষার্থী উপস্থিতি নিশ্চিত ও শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখতে কাজ করছি। তবে সকলের স্বদিচ্ছায় এই রাস্তা নির্মাণ হলে শিক্ষার মান ভালো হবে।

এ ব্যাপারে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এর আগে একাধিকবার রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু জমি মালিকের অনিচ্ছায় সেটি সম্ভব হয়নি ফলে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে চলাচল করে। এটি নিরসনে পুনরায় রাস্তা নির্মাণের জন্য ইউএনও এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজ উদ্দিন বলেন, ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দুর্ভোগের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। শিক্ষার পরিবেশ যাতে ব্যাহত না হয় ও দুর্ভোগ লাঘবে শিক্ষা বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বদা সজাগ বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত