ইতিহাস-ঐতিহ্যের অপূর্ব নিদর্শন মিঠাপুকুর মসজিদ

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

নয়নাভিরাম সবুজ প্রকৃতি। চারদিকে সারি সারি গাছগাছালি। সঙ্গে মিশে আছে মেঠোপথ। পাখির চোখে রং-তুলিতে আঁকা রূপসি বাংলা। পিচঢালা সড়কের পাশের আঁকাবাঁকা সরু মেঠোপথে হাঁটতেই নজর কাড়বে একটি মসজিদ। যেন দিগন্ত জোড়া ফসলি খেতের মাঝে মসজিদটি ভাসমান। এটি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় অবস্থিত। প্রায় ২১৩ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম এক নিদর্শন। রংপুর মহানগরী থেকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মিঠাপুকুর উপজেলা সদর থেকে ১ কিলোমিটারের কম দূরত্বে এশিয়ান হাইওয়ের উত্তর-পশ্চিম পাশে মসজিদটির অবস্থান। এই মসজিদটি মিঠাপুকুর মসজিদ বা মিঠাপুকুর বড় মসজিদ নামে পরিচিত।

১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলায় ৮৬০টি মসজিদ রয়েছে। এর মধ্যে দর্শনার্থীদের কাছে বেশ সমাদৃত এই মসজিদ। মসজিদের প্রবেশদ্বারে সাঁটানো তথ্য থেকে জানা যায়, প্রাচীন মসজিদটি হিজরি ১২২৬ মোতাবেক ১২১৭ বঙ্গাব্দ শুক্রবার এবং ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে জনৈক শেখ মোহাম্মদ মোয়াজ্জম এর প্র-পুত্র শেখ মুহাম্মদ আসীন পিতা শেখ মোহাম্মদ সাবের কর্তৃক এটি নির্মিত হয়। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি নির্মিত হয় মোগল আমলের শেষ দিকে। মসজিদ থেকে একটু দূরে একটি জলাশয় রয়েছে। এটি যে প্রাক মুসলিম আমলে তৈরি তাতে সন্দেহ নেই। এ জলাশয় বা দিঘির নামানুসারে স্থানের নামকরণ হয়েছে মিঠাপুকুর। জদটির অমসািয়তাকার পরিমাপ আনুমানিক ১০.৬৬ মি. এবং তিনটি গোলাকার গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। মসজিদের চারপাশে রয়েছে সুরম্য গেটসহ অনেক পুরোনো বাউন্ডারি দেয়াল। দেয়ালের অভ্যন্তরে রয়েছে খোলা আঙিনা। মসজিদের চার কোনায় পিলারের ওপর রয়েছে চারটি মিনার। মিনারগুলো আট কোনাকারে নির্মিত। মিনারগুলো ছাদের কিছু ওপরে ওঠে গম্বুজ আকৃতিতে শেষ হয়েছে। এছাড়া চার কোণের উঁচু ছাদ। এখানে তিনটি অংশে মসজিদ ভাগ করে ৩ সেমি বৃত্তাকার গম্বুজ ও প্যারা-পুলি দেওয়াল নির্মিত হয়। গম্বুজগুলো সুন্দর প্যানেল, লতাপাতা, ফুল, জ্যামিতিক আকারের সঙ্গে পরিকল্পিত। দেখতে ড্রামস এবং দেয়ালের সাপের শিলালিপির মতো। মূল দরজা দিয়ে ঢুকে সুন্দর একটি উঠান বা বারান্দা।