ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বগুড়ায় সবজি বাজারে ধস

রাস্তায় সবজি ফেলে প্রতিবাদ

রাস্তায় সবজি ফেলে প্রতিবাদ

বগুড়ায় হঠাৎ করে সবজির বাজারে ধস নেমেছে। সবজির দাম কমে যাওয়ায় ক্রেতাদের সুবিধা হলেও বিপাকে পড়েছেন সবজি চাষিরা। সবজি বিক্রি করে হাটের খাজনার টাকা না ওঠায় অনেক চাষি রাস্তায় মুলা, বেগুন ফেলে রেখে যাচ্ছেন। গতকাল বগুড়ার মহাস্থানগড় সবজির হাটে এমন চিত্র দেখা গেছে। মহাস্থান গড়ের কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, অনেক কৃষক ভয়ে জমিতেই যাচ্ছেন না। আমি ২০ মণ মুলা ৬০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। ১ বস্তা মুলা হাটে আনতেই খরচ হয় ১০০ টাকা। এর আগেও রমজান এসেছি কিন্তু সবজির দাম এত কমে যেতে দেখিনি। মহাস্থান হাটে গিয়ে দেখা যায়, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা মণ। মুলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা মণ। অথচ রোজা শুরুর আগে পাইকারি বাজারে মুলা ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মণ, বেগুন ছিল ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল বলেন, আমি ৫ মণ বেগুন জমি থেকে তুলেছি। বেগুনগুলো ৬০ টাকা খরচ করে চান্দাইকোনা পাইকারি বাজারে নিয়ে যাই। সেখানে ২ টাকা কেজি দামে কিছু বেগুন বিক্রি করার পর ক্রেতা না থাকায় হাটে বেগুন ফেলে রেখে চলে আসি। কৃষক মজিদ বলেন, এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে খরচ হয় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। বেগুন হয় ১০০ মণ। বেগুন চাষ করে কখনো লোকসান গুনতে হয় না কিন্তু বর্তমান দাম যদি আরও দুই সপ্তাহ থাকে তাহলে কৃষকের অনেক লোকসান হবে। পাইকারি বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন, মুলা ছাড়াও প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমে গেছে। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, গাজর ১০ টাকা কেজি। ফুলকপি ১০ টাকা কেজি, মিষ্টি কুমড়া ১৫ টাকা কেজি, ক্ষিরা ২০ টাকা কেজি, বাঁধা কপি ৫-৭ টাকা পিস। বগুড়া সদর উপজেলার নূরইল গ্রামের মহাস্থান কাঁচামাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ১৭ টন গাজর কিনেছিলাম ১৫ টাকা কেজি দরে। পরে দুই লাখ টাকা লোকসান দিয়ে ১০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। রমজানের কারণে বগুড়ার বাইরে যাচ্ছে না সবজি। ঢাকায় এক ট্রাক সবজি পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা।

লোকসানের ভয়ে অনেকে সবজি পাঠাচ্ছেন না। রোজা শুরুর ৪ দিন পর্যন্ত সব কিছুর দাম স্বাভাবিক ছিল কিন্তু গত ৩-৪ দিন হল সব সবজির দাম অনেক কমে গেছে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মতলুবুর রহমান বলেন, বগুড়ায় এবার রবি মৌসুমে সবজির চাষ হয়ে ১৩ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে। এবার ফলনও হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে সবজি চাষ করে কৃষক ভালো দাম পেয়েছেন। এখন মৌসুম শেষ এ কারণে দাম কমে যেতে পারে। এখনো ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সবজি রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত