রাতে চুরি ঠেকাতে রসুনের খেত পাহারা

শিয়ালের কামড়ে আহত ১০ কৃষক

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় সাদা সোনা খ্যাত রসুন চাষে স্বপ্ন পূরণের আশায় দিন গুণছেন কৃষক-কৃষানিরা। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় রসুনের ভালো ফলন হয়েছে। তবে ক্ষেতের রসুন চুরি হওয়ায় আশঙ্কায় রাত জেগে নিজেদের উৎপাদিত রসুন খেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। রাতে পাহারা দিতে গিয়ে এ পর্যন্ত উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১০ জন শিয়ালের কামড়ে আহত হয়েছে।

খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৬টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১৬২০ হেক্টর। যা গত বছরে ছিল ১৫০০ হেক্টর। রসুন চাষে লাভবান হওয়ায় কৃষি বিভাগের পরামর্শ এটি বৃদ্ধি হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার গোয়ালডিহি, নলবাড়ী, হাসিমপুর ও কাচিনীয়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, জমিতে পলিথিন দিয়ে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে কৃষকরা সেখানে রাত্রিযাপন করছেন। কৃষকদের চোখে ঘুম নেই, রাত জেগে টর্চ লাইটের আলোয় রসুন খেত পাহারা দিচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শিয়ালের উপদ্রুব হওয়ায় তারা আতঙ্ক আছে। ঈদের আগেই রসুন উঠানো ও ঘরে তোলার কাজ শেষ হবে বলে কৃষকরা জানায়। ৫০ শতকের প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এই বছর খরচ হয় প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটা বেড়ে গেছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫৫-৭০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ৩০০০-৩৫০০ টাকা। সে হিসেবে অন্য আবাদের চেয়ে রসুন চাষ লাভবান বলে জানান উপজেলার গোয়ালডিহি জমির শাহ পাড়ার রসুন চাষি রিশাদ শাহ। গোয়ালডিহি গ্রামের রসুন আশরাফ আলী বলেন, সময়ের সঙ্গে রসুন চাষে খরচ ও শ্রম বেড়েছে। কিন্তু এত কষ্টে আবাদ করেও চোরের চিন্তায় রাত জাগতে হয়? কেন না, রসুন দামি ফসল তাই পাহারা দিচ্ছি। মনির জীবন নামে এক যুবক তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন আমাদের গ্রামে ৩ জনসহ আসে পাশের গ্রামে ১০ জন কৃষককে শিয়াল কামড়ানোর খবর শুনলাম। অর্ধেক নাক ছিঁড়ে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। একদিকে রাতের আধারে জমির ফসল চুরি অন্যদিকে দিনে দুপুরে শেয়ালের উৎপাত। কৃষক যেনো কোনো কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছে না এখন। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় চলতি মৌসুমে ভালো ফলন ও বর্তমান বাজারে রসুনের দাম বেশি পাওয়ার মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হবেন। পেঁয়াজ চুরির বিষয়টি স্থানীয় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। চুরি রোধে কৃষকরা দিনে ও রাতে পাহারা দিচ্ছে শুনেছি।’ এবিষয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, থানা পুলিশ, গ্রাম পুলিশ ও রাত্রিকালীন পাহারাদাররা চুরি রোধে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। এদের সঙ্গে জনগণের সচেতন ভূমিকা চুরি রোধ ও অপরাধ কমাতে অনেক কার্যকর হবে।