ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মাংস ব্যবসায়ীর কারসাজিতে ঠকছেন ভোক্তারা

মাংস ব্যবসায়ীর কারসাজিতে ঠকছেন ভোক্তারা

নওগাঁ পৌর মাংস বাজারে দোকানে ঝুলানো তালিকায় লিখা রয়েছে ৬৬৫ টাকা কেজি। যেখানে এটা যৌক্তিক দাম বেঁধে দেয়া হয়েছে। এই দামে মাংস পাওয়া গেলেও কেজিতে চর্বি মিলছে প্রায় ২০০-২৫০ গ্রাম। তবে মূল্য তালিকা ছাড়া ক্রেতাদের কাছ থেকে ৭৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে চর্বি ছাড়া মাংস। মাংস ব্যবসায়ীদের এমন কারসাজিতে ক্রেতার সাথে ব্যবসায়ীদের তর্ক বাড়ছে। কিন্তু তারপরও ব্যবসায়ীরা বলছেন, কেজিতে তাদের ১০০ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। নওগাঁ শহরের গোস্তাহাটির মোড়ে পৌর মাংসের বাজার। মাংস ব্যবসায়ীদের এমন কারসাজির অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় কয়েকজন সংবাদকর্মী মাংস বাজারে যান। ৬৬৫ টাকায় চর্বিযুক্ত এবং ৭৫০ টাকায় চর্বি ছাড়া মাংস বিষয়ে ক্রেতাদের সাথে ব্যবসায়ীদের দর কষাকষি চলছিল। মাংস ব্যবসায়ীদের কাছে সংবাদকর্মীরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে মুহূর্তের মধ্যে ক্রেতাকে ৬৬৫ টাকায় চর্বি ছাড়া মাংস দেন। আবার কাউকে ৬৮০ টাকাতেও চর্বি ছাড়া মাংস দেয়া হয়েছে। মাংস ব্যবসায়ীদের এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ ভোক্তারা। বিষয়টি প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ভোক্তারা। ব্যবসায়ীরা জানান, পৌর বাজারে বর্তমানে ১০ জন ব্যবসায়ী প্রতিদিন ১০টি করে গরু জবাই করছে। প্রতিজন ব্যবসায়ীর প্রতি দিনই ৩-৪ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। কিন্তু তারপরও ব্যবসা চালু রাখতে হচ্ছে। ব্যবসা বন্ধ রাখলে পরবর্তীতে ওই ক্রেতারা আর দোকানে আসবে না। লস্করপুর গ্রামের মাংস ক্রেতা গৃহবধূ বলেন, বাড়িতে অনুষ্ঠান হবে মাংস কেনার জন্য আসা। শুরুতে ভালো মাংস দিবে বলে ব্যবসায়ী ৭৫০ টাকা কেজি চায়। পরে সাংবাদিকরা আসার পর ৬৮০ টাকা কেজি হিসেবে ৮ কেজি মাংস কিনেছি। কিন্তু তারপরও চর্বি ও হাড়ের পরিমাণ বেশি দিয়েছে। মাংস ব্যবসায়ী মিজানুর বলেন- গত সোমবার ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকায় ষাঁড় গরু কিনে মাংস বিক্রি করা হয়। যেখানে ৩ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। অনেক ক্রেতা চর্বি নিতে চাচ্ছেন না তারা ভালো মাংস নিতে চান। যারা ভালো মাংস নিতে চান তাদের জন্য ৭৫০ টাকা। আর যারা চর্বিসহ নিতে চান তাদের জন্য ৬৬৫ টাকা। প্রতি কেজিতে প্রায় ২০০-২৫০ গ্রাম চর্বি থাকবে। চর্বি তো আর আলাদা করে বিক্রি করা সম্ভব না। এজন্য মাংসের সাথে চর্বি বিক্রি করতে বাধ্য হতে হচ্ছে। আমরা যেভাবে মাংস বিক্রি করছি এতে করে কেজিতে ১০০ টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। নওগাঁ ফারুক মিট স্টোরের স্বত্বাধিকারী ফিরোজ হোসেন বলেন- গত সোমবার ৬১ হাজার টাকায় গরু কিনে মাংস বিক্রি করা হয়েছে ৫৮ হাজার টাকায়। যেখানে লোকসান হয়েছে ৩ হাজার টাকা। চোখের আইডিয়া করে হাট থেকে গরু কেনা হয়। ঢাকার ব্যবসায়ীরা গরু কেনায় হাটে গরুর দাম বেশি। ৮০০ টাকা কেজি ওজন হিসেবে গরু কিনতে হচ্ছে। সেখানে আমরা বিক্রি করছি ৬৬৫ টাকা কেজি। সরকারের বেঁধে দেয়া দামে মাংস বিক্রি করতে গিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে পড়ছি। এ পর্যন্ত আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। লাভের আশায় বার বার লোকসান হয়ে যাচ্ছে। সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। নওগাঁ পৌর মাংস বাজার সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, সরকারের নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এভাবে লোকসান করে মাংস বিক্রি করতে হবে। প্রতিদিনই আমাদের লোকসান হচ্ছে। একসময় দেখা যাবে দোকান থাকবে কিন্তু আমরা থাকব না। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের সাথে বসব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত