শ্যামনগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সহস্রাধিক ডাম্পার

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমগীর সিদ্দিকী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)

শ্যামনগরে উপজেলাতে আইন অমান্য করে ওভার লোড নিয়ে শহরে বা গ্রামে বেপরোয়া গতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ১০ চাকার ডাম্পার মাটিবাহী ট্রাক। এসব যানের চাকার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক এখন ভেঙেচুরে একাকার। ফলে প্রতিদিন এলাকাবাসীসহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পরিবহন চালক, যাত্রী ও পথচারীরা, প্রাণ হারাচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়স্ক মানুষ। কেবল সড়কের ক্ষতি নয়, অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। বছর শুরু থেকে ৩ মাসে মাটিবাহী ট্রাকের চাকায় পড়ে মারাত্মক জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে নারীসহ ১০ জনের ও বেশি। দণ্ডবিধিতে কোনো সরকারি সম্পদের ক্ষতি করলে এর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা আছে। ৪৩১ ধারা মোতাবেক সরকারি রাস্তার ক্ষতি সাধন দণ্ডনীয় অপরাধ। এ অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তি পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম জেলসহ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে। অথচ রহস্যজনক কারণে প্রশাসন ও পুলিশ কেন নীরব। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার শহরতলীর সোনারমোড়-গুমানতলী, বংশীপুর, পাতড়াখোলা, ভেটখালী, রমজাননগর, রামজীবনপুর নুরনগর, খানপুর, ভুরুলিয়া, নওয়াবেকী, গোবিন্দপুর এবং কাশিমাড়ীসহ বিভিন্ন সড়কে বেহাল দশা। সদ্য সংস্কারকৃত গোডাউন মোড় থেকে নুরনগর রাস্তা ৬ মাস যেতে না যেতে পূর্বের অবস্থায়। অতিরিক্ত ভার নিয়ে ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কটি এখন বেহাল। এ সড়কে চলা ট্রাকের বেশির ভাগই শ্যামনগরের প্রভাবশালীদের। এ কারনে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারে না। প্রতিটি ১০ চাকার ট্রাক বা ডাম্পার বহন করছে অন্তত ৪৫-৫০ মেট্রিক টন মাটি। ছয় চাকার ডাম্পার বহন করছে ২৫-৩০ টন। পাঁচ টন বহন ক্ষমতার ট্রাকে মাটি যাচ্ছে ১১-১৪ টন। আর অনভিজ্ঞ চালকরা বেখেয়ালভাবেই চালাচ্ছে। গত কয়েকদিনে এসব ডাম্পার ট্রাকের ধাক্কায় কয়েকজন নিরীহ মানুষ দুর্ঘটনায় পড়েছে, যে কারণে আতঙ্কিত করে তুলেছে। সরেজমিন উপজেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসন-পুলিশ সদস্যদের সামনে দিয়ে অবাধে চলাচল করছে মাটিবাহী ডাম্পার ট্রাক। কিন্তু এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে কোন আইন প্রয়োগ না করে শুধু মোটরসাইকেল ধরপাকড় করছে সংশ্লিষ্টরা। এলাকাবাসী জানায়, মাটি বহনকারী বেপরোয়া যান চলাচলে ধুলোবালি উড়ে রাস্তার দু’পাশের ঘর-বাড়ি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য। সড়কের ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, সড়ক নষ্টের অন্যতম কারণ ওভার লোড বহন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তারা একাধিকবার জানিয়েছেন। বিআরটিএ সাতক্ষীরা সার্কেলের সহকারী পরিচালক বলেন, ওভার লোড বহন ও অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শ্যামনগরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজিবুল আলমের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি তা রিসিভ করেনি।