পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চতুর্থ শ্রেণির কোয়ার্টারে থাকা একটি পরিবারের চার সদস্য অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেল। গত সোমবার রাতে সাহরির পূর্বে বিকট শব্দে কোয়ার্টারের একটি রুমের ছাদের অধিকাংশ পলেস্তরা খসে পড়ে যায়। এ সময় আশপাশের ভবনে থাকা লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে কোয়ার্টারে থাকা পরিচ্ছন্নতাকর্মী মাসুদের পরিবারকে উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকটি কোয়ার্টার বসবাসের অনুপযোগী যারা জীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত না করায় সেখানেই বসবাস করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনেক স্টাফ। এমনই একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী মাসুদ হোসেন চতুর্থ শ্রেণির কোয়ার্টারের এই দুই রুম ভাড়া থাকেন। মাসুদ জানান, প্রতি মাসে ৪ হাজার ৭০০ টাকারও বেশি সরকারিভাবে তার বেতন থেকে ভাড়া কেটে নেয়া হয়। সম্পূর্ণ জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটিতে চাকরির জন্য বাধ্য হয় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি। ভবনের ঝুঁকির বিষয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সুজন সাহাকে বারবার জানিয়েছি। তিনি আরো জানান আজ তার পরিবারের চার সদস্য অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও তার প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার মালামালসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়। মাসুদ আরো জানান সেহরি খাওয়ার পূর্বে তারা হাতমুখ ধোয়ার জন্য বাথরুমে ছিলেন এমন মুহূর্তে খাবার রুমের ছাদ ভেঙ্গে পড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সরেজমিন গিয়ে জানা যায় যে হাসপাতালের জন্মলগ্নে তৈরি করা এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো দুয়েক বার মেরামত করা হলেও বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। রুমের ছাদে ফাটল দেখা দেয়ায় পানি চুয়ে পড়ে ছাদে পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে, দরজা-জানালা ভেঙে পড়াসহ ভবনের দেয়ালে শ্যাওলা পড়ে বসবাসের অনুপযোগী ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অথচ ভবন সংকটের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ আবাসিক এই ভবনে কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কে বসবাস করেন। গত ডিসেম্বরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পিরোজপুর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট একটি চিঠিতে দেখা যায়, ১৯৭৩-৭৪ সালে পিরোজপুর জেলার কাউখালীতে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির পাঁচটি ইউনিট বিশিষ্ট ডক্টরস কোয়ার্টার, নার্স ডরমেটরি, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির আবাসিক ভবনটি খুবই পুরোনো ও জরাজীর্ণ বসবাস অনুপযোগী উল্লেখ করে কার্যকরী ব্যবস্থার গ্রহণ করার জন্য চিঠি প্রধান করা হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অবহেলার কারণে ভবনটি এখন পর্যন্ত পরিদর্শন করা হয়নি।