ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বোরো খেতে ব্লাস্ট রোগ

দিশাহারা কৃষক
বোরো খেতে ব্লাস্ট রোগ

নীলফামারীর ডিমলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের চারা রোপণ করেছে উপজেলার দশটি ইউনিয়নের স্থানীয় কৃষকরা। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে একমুঠো ভাতের আশায় ও জীবনের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করার জন্য ধার-দেনা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষি জমিতে মনের আনন্দে বোরো ধান রোপণ করেছেন কৃষক। রোপণকৃত বোরো ধানগাছগুলো এখন যৌবনে ভরপুর। কিছুদিনের মধ্যেই ধান গাছের ডগার বুক চিরে বের হবে সবুজ কচি ধানের শীষ। রোপণকৃত জমিতে ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় কৃষকরা। ঠিক সেই সময় দেখা দিয়েছে পাতা ব্লাস্ট, গিট ব্লাস্ট ও নেক ব্লাস্টসহ বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হতাশ ও দিশাহারা। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকরা বালাইনাশক ওষুধ ব্যবহার করলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। নতুন নতুন রোগ সম্পর্কে কৃষকদের ধারণাও অজানা। এতে বোরো ধান চাষে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।

উপজেলার মধ্যম সুন্দর খাতা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে কৃষক পাষান আলী জানান, আমি ৬ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের বোরো ধান রোপণ করেছি। চারা জমিতে রোপনের পর বর্তমান পর্যন্ত ২-৩ বার বালাইনাশক ওষুধ স্প্রে করেও ধান ক্ষেতে কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে কিছু যায়গায় ধানের চারাগুলো হলুদ বর্ণ হয়ে ধানের গাছ গুলো বিবর্ণ হয়ে খাটো হয়ে পাতা মরে যাচ্ছে। ডগডগে ধানগাছগুলো আগুনে পোড়ার মতো দিনদিন শুকিয়ে খড়ে পরিণত হচ্ছে। এই খড় কেটে গৃহপালিত পশুকে খাওয়ানো উচিত হবে না জানান তিনি। এখন যে স্বপ্ন ও বুক ভরা আশা নিয়ে বোরো ধান চাষ করেছি তা এখন গুড়ে বালি হওয়ার উপক্রম।

একই গ্রামের কৃষক সহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিস হতে কোনো অফিসার এদিকে আসেন না নামও জানি না। তার রোপণকৃত বোরো ধানের জমিতে ওষুধ ব্যবহারে কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, এ পর্যন্ত দুই বার ঔষুধ ব্যবহার করেছি পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছি না। কৃষক মহিকুল ইসলাম জানান, চারা রোপনের পর ধান গাছগুলো ভালোই ছিল কয়েকবার ওষুধ ব্যবহার করেছি কিন্তু হঠাৎ করে আমার ধানের গাছগুলো খাটো হয়ে পাতা খড়ের মত হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করতে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ। এভাবে পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ফসল ঘরে তোলার আগেই আমাদের স্বপ্নগুলো বিলীন হবে। বালাপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান মুঠো ফোনে বলেন, সরেজমিন গিয়ে যার যার এ রকম ক্ষতি হয়েছে টিট্রমেন্ট দেব, এ পর্যন্ত কোনো কৃষক আমাকে জানায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ মোঃ সেকেন্দার আলী ও কৃষি সম্প্রসারন অফিসার মোঃ খোরশেদ আলম এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন ধরেন নি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নীলফামারীর উপপরিচালক ড.এস.এম. আবু বকর সাইফুল ইসলাম সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস হতে মাঠ পর্যায়ে বোরো ধান চাষে কিভাবে ভাল ফলন পাওয়া যায় সে বিষয়ে পরিচর্যা, রোগ প্রতিকার সম্পর্কে স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত