জামালপুরের বকশীগঞ্জে ব্যস্ততা বেড়েছে জামদানি শাড়ির কারিগরদের। যেন দম ফেলার সুযোগ নেই তাদের। এ ঈদে কোটি টাকার ব্যবসার সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা। হরেক রঙয়ের নকশার শাড়ির পেছনে দুজন শ্রমিকের সময় লাগে প্রায় এক সপ্তাহ। এরপর রাজধানী ঢাকাসহ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৯-২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এতে স্বাবলম্বী হচ্ছেন- পাখিমারা গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে উপজেলার পাখিমারা গ্রামে জামদানি শাড়ি তৈরি শুরু হয়। এখানে কারিগর হিসেবে কাজ করেন কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এ কাজে জড়িত প্রায় ২৫০ পরিবার। তাঁতিদের হাতে রেশম সুতার নিপুণ বুননে তৈরি হচ্ছে জামদানি, পাঞ্জাবি ও টুপিস। গ্রামের প্রতিটি ঘর এখন যেন এক একটি জামদানি তৈরির কারখানা। জামদানির কারিগর আক্কাস সোহান, সুমন মিয়া ও রাসেল বলেন, আমরা অনেকে ৭-৮ বছর ধরে এখানে কাজ করছি। একটি শাড়ি বানাতে দুজন শ্রমিকের এক সপ্তাহ সময় লাগে। সর্বনিম্ন ৯ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকার বেশি দামে এক একটি শাড়ি বিক্রি হয়। এসব শাড়ি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে থাকে। এমনকি দেশের বাইরেও রপ্তানি হয়। মো. হাসান সবুজ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, গ্রামে অল্প বয়সি ছেলেরা দীর্ঘদিন ধরে এ কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। এতে তারা মাসে ১০-১২ হাজার টাকা আয় করার সুযোগ পাচ্ছেন। এদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সবকিছুর দাম বাড়লেও বাড়েনি পণ্যের মূল্য। এতে বাজার ধরে রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। জামালপুর বিসিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সম্রাট আকবর বলেন, জামদানি শাড়ি এ এলাকার ঐতিহ্য। উদ্যোক্তাদের কাঁচামাল আনতে কোনো সমস্যা হলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া যদি আর্থিক সহায়তা লাগে তাহলে আমরা স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করব। এছাড়া বাজাজাতকরণের পাশাপাশি শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শফিউর রহমান বলেন, নকশীকাঁথার পাশাপাশি জামদানি এ এলাকার ঐতিহ্য। এরইমধ্যে নকশীকাঁথা জিআই স্বীকৃতি লাভ করেছে। জামদানি শাড়ি নিয়েও আমাদের বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। এ শিল্প বিকাশে কেউ যদি দলবদ্ধ হয়ে প্রশাসনের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করে, তবে অবশ্যই তাদের সহযোগিতা করা হবে।