যশোরে দাবদাহে গলছে মহাসড়কের পিচ
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
যশোরে তাবদাহের ফলে গলে যাচ্ছে সড়ক-মহাসড়কের বিটুমিন (পিচ)। গরমে পিচ গলে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহে পিচ গলে যাওয়ায় সড়কের কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যশোর-নড়াইল সড়কে এ অবস্থা দেখা গেছে। আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা যশোরে তাপপ্রবাহ চলছে। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠছে। তবে বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। গত বুধবার যশোরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল ৫০ শতাংশ। এই মৃদু থেকে মাঝারি তাপমাত্রায় গলে যাচ্ছে যশোর-নড়াইল মহাসড়কের বিটুমিন (পিচ)। স্থানে স্থানে গাড়ির চাকা বা পথচারীর স্যান্ডেল জুতোর সঙ্গেও পিচ উঠে যাচ্ছে। এদিকে, বিটুমিন গলে পিচ উঠে যাওয়ায় সড়ক সুরক্ষার জন্য মাঠে নেমেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। তারা গলে যাওয়া পিচের উপরে বালি ও কুচি পাথর দিচ্ছে। যাতে গলে যাওয়া পিচ আবার আগের অবস্থায় থাকে। যশোর-নড়াইল সড়কের ঝুমঝুমপুর বাজারে রিকশা চালক রফিক হোসেন জানান, রোদ গরমে দুপুর থেকে রাস্তার পিচ গলতে শুরু করে। দুপুর গড়ানোর পর রাস্তার পিচ যেন কাদায় পরিণত হয়। ফলে রিকশার চাকা রাস্তায় আটকে যায়। এতে তাদের অ্যাক্সিডেন্টের ঝুঁকি বাড়ে, তেমনি রাস্তারও এবড়ো থেবড়ো হয়ে যাচ্ছে। ঝুমঝুমপুর বাজারের ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম জানান, রাস্তায় হাঁঠতে গেলে জুতো স্যান্ডেল পিচে আটকে যাচ্ছে। দু’একজন পিচ থেকে তুলতে না পেরে স্যান্ডেল রেখেই চলে যাচ্ছেন। গাড়ির চাকার চাপায় তা রাস্তার পিচের সঙ্গেই আটকে থাকছে। শুধু যশোর-নড়াইলই নয় যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের কিছু কিছু স্থানেও একই অবস্থার খবর পাওয়া গেছে। তবে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহের কারণে বিটুমিন গলে যাওয়ায় সড়কের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাধারণত সড়কে যে পিচ ব্যবহার করা হয় তা ৬০-৭০ গ্রেডের। এর গলনাঙ্ক ৪৮ থেকে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে পিচ গলার কথা। কিন্তু তার অনেক আগেই পিচ গলে যাচ্ছে। সওজ সংশ্লিষ্ট সূত্র পিচ গলার কারণ হিসেবে দাবি করেছে, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নিচে থাকলেও বাতাসের আদ্রতার কারণে অনুভূতির পরিমাণ আরো কয়েক ডিগ্রি বেশি। সড়কের পিচের উপরে এই তাপমাত্রা আরো প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকে। আর কালো হওয়ায় এই পিচ সূর্যের তাপও শোষণ করে বেশি। এছাড়া সড়কে চাকার ঘর্ষণের ফলে উৎপাদিত তাপও এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় পিচ গলে যেতে পারে। তবে এর বাইরে সড়কের কাজ মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানান, যশোর-নড়াইল সড়কের যেসব স্থানে বিটুমিনের পরিমাণ বেশি পড়েছে, প্রচণ্ড গরমে সেসব জায়গা গলে যাচ্ছে। এজন্য সড়কের গলে যাওয়া স্থানে বালি ও নুড়িপাথর দেওয়া হচ্ছে। যাতে গলে যাওয়া পিচ আগের অবস্থায় থাকে।