শত বছরের কবর। তাও আবার ভাসমান। এখনও অক্ষত। বছরের পর বছর কবরটি ভেসে আছে যা এলাকায় ফেলেছে চাঞ্চল্য। ঝিনাইদহে মিলেছে এমন একটি কবরের সন্ধান। কবরটি রাস্তার পাশে হওয়ায় পথচারীরা কৌতুহলবশত এক পলক না তাকিয়ে যেতে পারে না। এত বছরের পুরোনো কবর এমনভাবে টিকে থাকা বিরল ঘটনা বলে মনে করেন স্থানীয়রা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে অথৈ পানি। মাঝখানে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে কবরটি। এখনও তার স্থাপত্যশৈলী পুরোপুরি দেখা যাচ্ছে। গভীর পানির ভেতর কমপক্ষে ১৫ ফুট দৃশ্যমান কবরটি। ঝিনাইদহের শৈলকূপার দিগনগর গ্রামে এমন একটি কবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এতদিন ধরে সম্পূর্ণ অবিকৃত আছে। তাও আবার গভীর পানির মধ্যে ভাসমান, যা এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
এলাকার মুরব্বি ইদ্রিস আলী, ইসলাম বিশ্বাস জানান, তাদের বুদ্ধি হওয়ার আগে থেকেই এ কবরটি দেখে আসছে। বছরের পর বছর পানির মধ্যে ভাসমান অবস্থায় থাকলেও ঠায় দাঁড়িয়ে আছে সেটি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯২৫ সালে দিগনগর গ্রামের সবুরা খাতুন কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর তার পরিবার পারবারিক জায়গায় একটি পুকুরের পাশে তাকে দাফন করে। এরপর ১৯৯১ সালে কবরটি পাকা করা হয়। তারপর ২০০০ সালের দিকে কোনো এক সময়ে পুকুরের পাড় ভেঙে কবরটি পুকুরের মধ্যে চলে যায়। এরপর পুকুরের পাড় আবার ভেঙে যাওয়ায় কবরটি বর্তমানে পুকুরের মাঝখানে অবস্থান করছে। তবে পরিবারের সদস্যরা জায়গা-জমি বিক্রি করে শহরে চলে আসেন। এরপর থেকে কবরটি ভাসমান অবস্থায় থেকে যায়। তবে সেই পুকুরে এখন কেউ গোসল করে না। শুধু মাছ চাষ করা হয়। দীর্ঘ সময় পানির মধ্যে থাকার ফলে কবরটি পুরোপুরি ভেঙে পড়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি, অবিকৃত রয়ে গেছে। মৃত সবুরা খাতুনের দ্বিতীয় প্রজন্ম নাতি ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান খুররম জানান, ওই সময় খুবই যত্ন করে কবরটি পাকা করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর আর কোনো মেইনটেনেন্স করা হয়নি। কিন্তু কবরটি যে এতদিন ধরে টিকে থাকবে তাও আবার পানির মধ্যে তা একটি বিস্ময়। পরবর্তীতে শুকনো মৌসুমে আমরা পারিবারিকভাবে আবারও কবরটির দেখভাল করব বলে আশা করি। তিনি আরও জানান, মৃত সবুরা খাতুন মৃত ইমান আলি মিয়ার স্ত্রী ছিলেন। আমার দাদা ইমান আলী ১৯৩২ সালে মারা যান।